নামাজে বুকের উপর হাত বাদা

রাসুল (সঃ) হাত নাভীর উপরে অর্থাৎ বুকের উপরে হাত বেঁধে নামায পড়তেন। 


(বুখারি ১ম খন্ড ১০২ পৃঃ, মুসলিম শরাহ ইমাম আন-নববী ১ম খন্ড-১৭৩ পৃঃ, সহিহ ইবনে খুযাইমা ১ম খন্ড ১২৩ পৃঃ, আবু দাউদ ১ম খন্ড ১১০ পৃঃ, তিরমিযি ৩৪-৩৫ পৃঃ, ইবনু মাজাহ ৫৯ পৃঃ মিশকাত ৭৫ পৃঃ, 

মুয়াত্তা মুহাম্মদ ১৬০ পৃঃ)

ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে ছিনার উপরে রাখতেন (সহিহ ইবনে খুযাইমা-২০ পৃঃ, আবু দাউদ মারাসিল-৬ পৃঃ)

লোকেরা ডান হাত বাম হাতের যেরার উপর রাখতে আদিষ্ট হতেন (বুখারি ১০২ পৃঃ),
নামায আদায় করার সময় তোমরা হাত বাঁধবে বুকের উপর (আবু দাউদ ১ম খন্ড হাঃ ৭৫৮),
সাহাবী ওয়াইল বিন হুজর (রাঃ) বলেন যে, রাসুল (সঃ) কিভাবে সালাত কায়িম করেন, তা দেখার 

জন্য আমি রাসুল (সঃ) এর সালাতের দিকে তাকালাম, রাসুল (সঃ) দাঁড়িয়ে আল্লাহু আকবার বলে 

হস্তদয় কান পর্যন্ত 

উঠালেন এবং ডান হাত বাম পাঞ্জার রোসগ ও সায়েদের উপর রাখলেন (নাসায়ী ১৪১ পৃঃ),
রোসগ অর্থ হাতের কব্জী এবং সায়েদ অর্থ কব্জী হতে কনুই পর্যন্ত ।


সাহাবী তাউস (রাঃ) বলেন, রাসুল (সঃ) সালাতের অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে, 

অতঃপর মজবুত করে বুকের উপর ধারণ করলেন (মারাসিলে আবু দাউদ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৩১৬ পৃঃ),

কামিসাহ ইবনুহ হুলব (রাঃ) তার পিতা হতে উদ্ধৃতি করে বলেন যে, আমি রাসুল (সঃ) কে সালাতের 

মধ্যে ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে হস্তদয় বুকের উপর ধারণ করতেন (মুসনাদে আহমাদ, 

তুহফাতুল আহওয়াযী ১ম 

খন্ড ২১৬ পৃঃ),

সিনার উপর হাত রাখার আরো দলিল দেখুন (বুলগুল মারাম ২০ পৃঃ, মুসলিম শরাহ ইমাম আন-নববী 

১ম খন্ড-১৭৩ পৃঃ, তোহফা শরাহ তিরমিযী ১ম খন্ড ২১৫ পৃঃ, মিসখুল খেতাম ১ম খন্ড ২১৫ পৃঃ, তাফসিরে কাবির 

৮ম খন্ড ৬৩৫ পৃঃ, তাফসীরে মা’আলেমুত তানযীল ৯৯৭ পৃঃ, তাফসীরে খাযেন ৭ম খন্ড ২৫৩ পৃঃ),

নাভীর উপর বা বুকের উপর হাত বাঁধার আরও দলিল দেখুন (মিশকাত- মাওলানা নুর মোহাম্মাদ 

আযমী ২য় খন্ড হাঃ ৭৪১-৭৪২, মিশকাত মাদ্রাসার পাঠ্য ২য় খন্ড হাঃ ৭৪১-৭৪২, বাংলা অনুবাদ 

বুখারি মাওলানা আজীজুল .

হক ১ম খন্ড হাঃ ৪৩৫, সহিহ আল বুখারি আঃ প্রঃ ১ম খন্ড হাঃ ৬৯৬, সহিহুল বুখারী তাওহীদ 

পাবলিকেশান্স ১ম খন্ড হাঃ ৭৪০,




বুখারী শরীফ ইঃ ফাঃ ২য় খন্ড হাঃ ৭০২; মুসলিম শরীফ ইঃ ফাঃ ২য় খন্ড হাঃ ৮৫১; আবু দাউদ ইঃ ফাঃ ১ম খন্ড হাঃ ৭৫৯; তিরমিযী শরীফ ইঃ ফাঃ ১ম খন্ড হাঃ ২৫২; জামে তিরমিযী মাওলানা আব্দুন নূর সালাফী ১ম খন্ড হাঃ ২৪৪)

হানাফি মাযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব হিদায়াহ ইউসুফি প্রেসের ছাপা রাবে সিফাতুস সালাত ১ম খন্ড, হাশিয়া ৮৬ পৃঃ আছে-

সালাতে নাভীর নীচে হাত বাঁধার হাদিস যঈফ এবং তার যঈফ দুর্বলতা সম্বন্ধে মুহাদ্দীসগণ সকলেই একমত । আরও স্মরনীও যে, আলা সদরিহী বুকের উপর হাত বাঁধার অনেক হাদিস রয়েছে

সালাতে বুকের উপর হাত বাঁধা সম্পর্কে সহীহ হাদীস সমূহ :

(১) সাহল বিন সা’দ (রাঃ) বলেন, “লোকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হত যেন তারা সালাতে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখে ।” (বুখারী, অধ্যায় আজান, ১/১০২পৃষ্ঠা, আরবী ; বুখারী, হাদীস নং ৭৪০, তাওহীদ 



পাবলিকেশন্স) মূল হাদীসে বর্ণিত ‘যিরাআ’ শব্দের অর্থ কনুই থেকে মধ্যমা আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত দীর্ঘ হাত (আল-মুজামুল ওয়াসীত্ব)।



(২)ওয়ায়িল বিন হুজর(রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি দেখেছেন, “নবী করীম (সাঃ) সালাত শুরুর মুহূর্তে তাঁর দুহাত তোলেন…’ অতঃপর তিনি তাঁর বাম হাতের উপর ডান হাত রাখেন ।”(মুসলিম, ১/১৭৩পৃষ্ঠা, আরবী ; 



মুসলিম, ২য় খন্ড, হাদীস নং ৮৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

(৩)ওয়ায়িল বিন হুজর (রাঃ) বলেন, “আমি নবী (সাঃ)-এর সাথে সালাত আদায় করেছি । তিনি তাঁর বাম হাতের উপর ডান হাত স্বীয় বুকের উপর রাখলেন ।” (সহীহ ইবনু খুযাইমাহ, হাদীস নং ৪৭৯; আবূদাঊদ, 



হাদীস নং ৭৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন্স)

(৪)হুলব আত-তাঈ (রাঃ) বলেন, “আমি নবী (সাঃ)-কে বাম হাতের জোড়ের (কব্জির) উপরে ডান হাতের জোড় স্বীয় বুকের উপরে রাখতে দেখেছি ।”(মুসনাদে আহমাদ ; তিরমিযী ৫৯পৃষ্ঠা, আরবী ; তিরমিযী, ১ম 



খন্ড, হাদীস নং ২৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

(৫)ওয়ায়িল বিন হুজর হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কিভাবে সালাত আদায় করতেন, তা আমি অবশ্যই দেখব । তাই আমি তাঁর প্রতি লক্ষ্য করলাম । তিনি দাঁড়িয়ে কান পর্যন্ত দু’হাত তুলে 



‘আল্লাহুআকবার’ বললেন । অতঃপর তাঁর ডান হাত বাম হাতের পিঠ, কব্জি, ও প্রকোষ্ঠের (হাতের রলা) উপর রাখলেন ।”(নাসাঈ, ১/১৪১পৃষ্ঠা,আরবী; আবূদাঊদ, হা/৭২৭)

আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) বলেন, ‘বুকের উপর হাত রাখাটাই সহীহ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত । এছাড়া অন্য কোথাও রাখার হাদীস হয় দুর্বল, না হয় ভিত্তিহীন ।’ (সিফাতু সালাতিন নবী(সাঃ), বাংলা অনুবাদ- 



আকরামুজ্জামান, ৭১পৃষ্ঠা, ফুটনোট)

বিশদভাবে জানতে দেখুন :

(১)মাসিক আত-তাহরীক, মে ২০০৪, ১০-১৫পৃষ্ঠা (রাজশাহী, বাংলাদেশ);

(২)সহীহুল বুখারী ১ম খন্ড, ৩৫৭-৩৬০পৃষ্ঠা, হাদীস নং ৭৪০ ও ফুটনোট (তাওহীদ পাবলিকেশন্স, বংশাল, ঢাকা-১১০০) 










সহীহ আল-বুখারী থেকে সংগৃহীতঃ


১০/৭৬. অধ্যায়ঃ কাতারে কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলানো।


(তাবেয়ী) নুমান ইবনু বশীর (রহঃ) বলেন, আমাদের কাউকে দেখেছি পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির টাখনুর সাথে টাখনু মিলাতে।


৭২৫. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী (সাঃ) বলেনঃ তোমরা তোমাদের কাতার সোজা করে নাও। কেননা, আমি আমার পিছন হতেও তোমাদের দেখতে পাই। আনাস (রাঃ) বলেন, আমাদের প্রত্যেকেই তার পার্শ্ববর্তী 





ব্যক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলাতাম।


(আধুনিক প্রকাশনী হাদীস নাম্বার ৬৮১, ইসলামী ফাউন্ডেশান হাদীস নাম্বার ৬৮৯)
রাসুল (সা) বলেনঃ


“তোমাদের নামাযে কাতারগুলোকে মিলাও এবংপরস্পর নিকটবর্তী হয়ে যাও, আর কাঁধের সাথেকাঁধ মিলাও। সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, অবশ্য আমি শয়তানকে কাতারের মধ্যে এমনভাবে ঢুকতে দেখি যেমন ছোট ছাগল ঢোকে।"
[আবু দাউদ ১০৯২]


 

------------------------------------------------------------------------- 
1 আমীন বলা

রাসূল (সা:) জেহরী সলাতে সব সময় জোরে-বেশ উচ্চ স্বরে আমীন বলতেন।

* ওয়ায়েল বিন হুযর (রা:) রাসূল (সা:) এর পিছনে সলাত পড়েছেন, রাসূল (সা:) জোরে আমীন বলতেন। (আবু দাউদ পৃ-১৩৪)

* আবু হুরায়রার বাচনিক বর্ণিত: তিনি বলেন, রাসূল (সা:) যখন "গাইরিল মাগযুবি আলাইহিম ওয়ালায্ যাল্লীন" পড়তেন তখন এমন ভাবে আমীন বলতেন যে, প্রথম কাতারের লোকেরাও উহা শুনতেন। (আবু দাউদ)

* হযরত আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত - লোকেরা আমীন বলা ছেড়ে দিয়েছে অথচ রাসূল (সা:) "গাইরিল মাগযুবি আলাইহিম ওয়ালায্ যাল্লীন" বলে এতটা জোরে আমীন বলতেন যে, প্রথম কাতারের লোকেরা শুনতে পেতেন এবং মসজিদে বেজে উঠতো । (ইবনে মাজহা, ১ম খন্ড পৃ-৬২) 

* বড় পীর আ: কাদের জিলানী জোরে আমীন বলার পক্ষপাতী ছিলেন। (গুণইয়াতুত তালেবীন ১১ পৃ)

আমীন শুনে চটা ইহুদীদের স্বাভাব

* হযরত আয়েশা (রা:) হ'তে বর্ণিত, (এবং হযরত ইবনে আব্বাস হ'তেও তিনি বলেন যে,) রাসূল (সা:) ফরমিয়েছেন, ইহুদীগণ তোমাদের প্রতি এতটা হিংসা আন্য কোন বিষয়ে করেনা যতটা করে সালাম দেওয়াতে এবং জোরে আমীন বলাতে; আতএব তোমরা বেশী ক'রে জোরে আমীন বল। (ইবনে মাজাহ পৃ-৬২)

মুক্তাদীদের জন্য ইমামের পিছনে উচ্চস্বরে আমীন বলার হাদীস যেসব কিতাবে পাওয়া গিয়াছে তার পৃষ্ঠাসহ একটি ছোট তালিকা প্রদান করা হল। প্রয়োজন মনে করলে দেখে নিবেন।

বুখারী ১ম খন্ড পৃ-১০৮
মুসলিম ১ম খন্ড পৃ-৭৬
তিরমিযী ১ম খন্ড পৃ-৩৪
নাসায়ী ১ম খন্ড পৃ-১৪৭
ইবনে মাজাহ ১ম খন্ড পৃ-৬২
বায়হাকী ২য় খন্ড পৃ-৫৯
আওনুল মা'বুদ ১ম খন্ড পৃ-২৫২
কানযুল উম্মাল ৩য় খন্ড পৃ-৫৯
মুহাল্লা ৩য় খন্ড পৃ-২৬৩ সহ আনেক কতিবে প্রমাণ আছে। 


2

জেহরী ছালাতে ইমামের সূরায়ে ফাতিহা পাঠ শেষে ইমাম-মুক্তাদী সকলে সরবে ‘আমীন’ বলবে। ইমামের আগে নয় বরং ইমামের ‘আমীন’ বলার সাথে সাথে মুক্তাদীর ‘আমীন’ বলা ভাল। তাতে ইমামের পিছে পিছে মুক্তাদীর সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করা সম্ভব হয় এবং ইমাম, মুক্তাদী ও ফের
েশতাদের ‘আমীন’ সম্মিলিতভাবে হয়। যেমন এরশাদ হয়েছে,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَمَّنَ الْإِمَامُ فَأَمِّنُوْا... وَفِي رِوَايَةٍ : إِذَا قَالَ الْإِمَامُ وَلاَ الضَّالِّيْنَ فَقُوْلُوْا آمِيْنَ، فَإِنَّ الْمَلآئِكَةَ تَقُوْلُ آمِيْنَ وَإِنَّ الْإِمَامَ يَقُوْلُ آمِيْنَ، فَمَنْ وَافَقَ تَأْمِيْنُهُ تَأْمِيْنَ الْمَلآئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ رواه الجماعةُ وأحمدُ- وَفِيْ رِوَايَةٍ عنه: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا قَالَ أَحَدُكُمْ آمِيْنَ وَقَالَتِ الْمَلآئِكَةُ فِي السَّمَاءِ آمِيْنَ، فَوَافَقَتْ إِحْدَاهُمَا الْأُخْرَى، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ، رواه الشيخانُ ومالكُ- وعن وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَرَأَ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّآلِّيْنَ فَقَالَ آمِيْنَ، وَمَدَّ بِهَا صَوْتَهُ، رواه أبو داؤدَ والترمذىُّ وابنُ ماجه-
কুতুবে সিত্তাহ সহ অন্যান্য হাদীছ গ্রন্থে বর্ণিত উপরোক্ত হাদীছগুলির সারকথা হ’ল এই যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, যখন ইমাম ‘আমীন’ বলে কিংবা ‘ওয়ালায্ যা-ল্লীন’ পাঠ শেষ করে, তখন তোমরা সকলে ‘আমীন’ বল। কেননা যার ‘আমীন’ আসমানে ফেরেশতাদের ‘আমীন’-এর সাথে মিলে যাবে, তার পূর্বেকার সকল গুনাহ মাফ করা হবে’।
[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৮২৫, ‘ছালাতে ক্বিরাআত’ অনুচ্ছেদ-১২; মুওয়াত্ত্বা (মুলতান, পাকিস্তান ১৪০৭/১৯৮৬) হা/৪৬ ‘ছালাত’ অধ্যায়, পৃঃ ৫২]
ওয়ায়েল বিন হুজ্র (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে ‘গায়রিল মাগযূবে ‘আলাইহিম ওয়ালায্ যা-ল্লীন’ বলার পরে তাঁকে উচ্চৈঃস্বরে আমীন বলতে শুনলাম’। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকেও অনুরূপ বর্ণনা এসেছে। [দারাকুৎনী হা/১২৫৩-৫৫, ৫৭, ৫৯; আবুদাঊদ, তিরমিযী, দারেমী, মিশকাত হা/৮৪৫]
‘আমীন’ অর্থ : اَللَّهُمَّ اسْتَجِبْ ‘হে আল্লাহ! তুমি কবুল কর’। ‘আমীন’ (آمِيْن)-এর আলিফ -এর উপরে ‘মাদ্দ’ বা ‘খাড়া যবর’ দুটিই পড়া জায়েয আছে। [মুনযেরী, ছহীহ আত-তারগীব হা/৫১১, হাশিয়া আলবানী, ১/২৭৮ পৃঃ]
নাফে‘ বলেন, ইবনু ওমর (রাঃ) কখনো ‘আমীন’ বলা ছাড়তেন না এবং তিনি এব্যাপারে সবাইকে উৎসাহ দিতেন’। আত্বা বলেন, আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের (রাঃ) সরবে ‘আমীন’ বলতেন। তাঁর সাথে মুক্তাদীদের ‘আমীন’-এর আওয়াযে মসজিদ গুঞ্জরিত হয়ে উঠত’ (حَتَّى إِنَّ لِلْمَسْجِدِ لَلَجَّةً)।[ বুখারী তা‘লীক্ব ১/১০৭ পৃঃ, হা/৭৮০; ফাৎহুল বারী হা/৭৮০-৮১ ‘সশব্দে আমীন বলা’ অনুচ্ছেদ-১১১।]
এক্ষণে যদি কোন ইমাম ‘আমীন’ না বলেন, কিংবা নীরবে বলেন, তবুও মুক্তাদী সরবে ‘আমীন’ বলবেন।[ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৫৭৫, অনুচ্ছেদ-১৩৯।]
 


রাফ‘উল ইয়াদায়নের ফযীলত (فضل رفع اليدين ) :

রাফ‘উল ইয়াদায়েন হ’ল আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণের অন্যতম নিদর্শন। হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) বলেন, ‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন হ’ল ছালাতের সৌন্দর্য (رفع اليدين من زينة الصلاة)।’ রুকূতে যাওয়ার সময় ও রুকূ হ’তে 

ওঠার সময় কেউ রাফ‘উল ইয়াদায়েন না করলে তিনি তাকে ছোট পাথর ছুঁড়ে মারতেন।[107] উক্ববাহ বিন ‘আমের (রাঃ) বলেন, প্রত্যেক রাফ‘উল ইয়াদায়েন-এ ১০টি করে নেকী আছে। [108] যদি কেউ রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতের মহববতে একটি নেকীর কাজ করেন, আল্লাহ বলেন, আমি তার নেকী ১০ থেকে ৭০০ গুণে বর্ধিত করি।[109] শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী (রহঃ) বলেন, ‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ হ’ল فعل تعظيمي বা সম্মান সূচক কম,র্ যা মুছল্লীকে আল্লাহর দিকে রুজু হওয়ার ব্যাপারে ও ছালাতে তন্ময় হওয়ার ব্যাপারে হুঁশিয়ার করে দেয়’। [110]

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সিজদা থেকে উঠে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন না’।[111] ইবনুল ক্বাইয়িম বলেন, ইমাম আহমাদ -এর অধিকাংশ বর্ণনাও একথা প্রমাণ করে যে, তিনি সিজদাকালে রাফ‘উল ইয়াদায়েন -এর সর্মথক ছিলেন না’।[112] শায়খ আলবানী সিজদায় আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) কখনো কখনো রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন বলে যে হাদীছ বর্ণনা করেছেন,[113] তার অর্থ রুকূর ন্যায় রাফ‘উল ইয়াদায়েন নয়। বরং সাধারণভাবে সিজদা থেকে হাত উঠানো বুঝানো হয়েছে বলে অনুমিত হয়। ইমাম আহমাদ বলেন, রাসূল (ছাঃ) দুই সিজদার মাঝে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন না’।[114]

রুকূ-সিজদার আদব (آداب الركوع والسجود) : বারা’ বিন আযেব (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর রুকূ, সিজদা, দুই সিজদার মধ্যকার বৈঠক এবং রুকূ পরবর্তী ক্বওমা-র স্থিতিকাল প্রায় সমান হ’ত। [115] আনাস (রাঃ) বলেন, এগুলি এত দীর্ঘ হ’ত যে, মুক্তাদীগণের কেউ কেউ ধারণা করত যে, রাসূল )ছাঃ) হয়তোবা ছালাতের কথা ভুলে গেছেন’।[116] 





‎[94] . নায়লুল আওত্বার ৩/১৯ পৃঃ।

[95] . ‘আশারায়ে মুবাশ্শারাহ’ অর্থাৎ স্ব স্ব জীবদ্দশায় জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন দশজন ছাহাবী। তাঁরা হলেন : ১.আবুবকর ছিদ্দীক্ব ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘উছমান আবু কুহাফা (মৃঃ ১৩ হিঃ বয়স ৬৩ বৎসর)। ২

. ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (মৃঃ ২৩ হিঃ বয়স ৬০) ৩. ‘উছমান ইবনু ‘আফফান (মৃঃ ৩৫ হিঃ বয়স অন্যূন ৮৩) ৪. ‘আলী ইবনু আবী ত্বালিব (মৃঃ ৪০ হিঃ বয়স ৬০) ৫. আবু ‘উবায়দাহ ‘আমের বিন ‘আব্দুল্লাহ ইবনুল জাররাহ (মৃঃ ১৮ হিঃ বয়স ৫৮) ৬. ‘আব্দুর রহমান বিন ‘আওফ (মৃঃ ৩২ হিঃ বয়স ৭৫) ৭. ত্বাল্হা বিন ‘উবায়দুল্লাহ (মৃঃ ৩৬ হিঃ বয়স ৬২) ৮. যোবায়ের ইবনুল ‘আওয়াম (মৃঃ ৩৬ হিঃ বয়স ৭৫) ৯. সা‘ঈদ বিন যায়েদ বিন ‘আমর (মৃঃ ৫১ হিঃ বয়স ৭১) ১০. সা‘দ বিন আবী ওয়াক্ক্বাছ (মৃঃ ৫৫ হিঃ বয়স ৮২) রাযিয়াল্লা-হু ‘আনহুম।

[96] . ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৭ পৃঃ ; ফাৎহুল বারী ২/২৫৮ পৃঃ, হা/৭৩৭-এর ব্যাখ্যা, ‘আযান’ অধ্যায়-১০, অনুচ্ছেদ-৮৪।

[97] . মাজদুদ্দীন ফীরোযাবাদী (৭২৯-৮১৭ হিঃ), সিফরুস সা‘আদাত (লাহোর : ১৩০২ হিঃ, ফার্সী থেকে উর্দূ), ১৫ পৃঃ।

[98] . তুহফাতুল আহওয়াযী ২/১০০, ১০৬ পৃঃ; আলবানী, ছিফাতু ছালা-তিন্নবী পৃঃ ১০৯।

[99] . ফাৎহুল বারী ২/২৫৭ পৃঃ, হা/৭৩৬-এর ব্যাখ্যা, ‘আযান’ অধ্যায়-১০, অনুচ্ছেদ-৮৪।

[100] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, বুখারী, মিশকাত হা/৭৯৩-৯৪ ‘ছালাতের বিবরণ’ অনুচ্ছেদ-১০।

[101] . বায়হাক্বী, মা‘রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার হা/৮১৩, ‘মুরসাল হাসান’ ২/৪৭২ পৃঃ; মুওয়াত্ত্বা মালেক ‘ছালাত শুরু’ অনুচ্ছেদ; ‘মুরসাল ছহীহ’, মিশকাত হা/৮০৮; নায়লুল আওত্বার ৩/১২-১৩; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৮।

[102] . মুসলিম হা/৮৬৫ ‘ছালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৯।

[103] . তিরমিযী, আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৮০৯, ‘ছালাতের বিবরণ’ অনুচ্ছেদ-১০।

[104] . নায়লুল আওত্বার ৩/১৪ পৃঃ; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৮।

[105] . মিশকাত হা/৮০৯-এর টীকা (আলবানী) ১/২৫৪ পৃঃ।

[106] . হুজ্জাতুল্লা-হিল বালিগাহ ২/১০ পৃঃ।

[107] . নায়লুল আওত্বার ৩/১২; ফাৎহুল বারী ২/২৫৭।

[108] . নায়লুল আওত্বার ৩/১২; ছিফাত ১০৯।

[109] . বুখারী, মুসলিম, ছহীহ আত-তারগীব হা/১৬; মিশকাত হা/৪৪।

[110] . হুজ্জাতুল্লা-হিল বালিগাহ ২/১০ পৃঃ।

[111] . ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৬৯৪।

[112] . মাসায়েলে ইমাম আহমাদ, (মদীনা ত্বাইয়েবাহ : ১৪০৬/১৯৮৬, ১ম সংস্করণ) মাসআলা-৩২০।

[113] . আলবানী, ছিফাতু ছালা-তিন্নবী ১২১ পৃঃ।

[114] . ইবনুল ক্বাইয়িম, বাদায়ে‘উল ফাওয়ায়েদ ৩/৮৯-৯০; মাসায়েলে ইমাম আহমাদ, মাসআলা-৩২০, ১/২৩৬ পৃঃ।

[115] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৮৬৯, ‘রুকূ’ অনুচ্ছেদ-১৩।

[116] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, ইরওয়াউল গালীল হা/৩০৭। 



মহিলাদের নামাজ নিয়ে কিছু কথা  http://saharalotus.blogspot.com/2012/08/blog-post_26.html