বারযাখ্‌ জীবন সম্পর্কে ইলিয়াসি তাবলীগ ও দেওবন্দিগণের দৃষ্টিভংগীঃ


বারযাখ্‌ জীবন সম্পর্কে ইলিয়াসি তাবলীগ ও দেওবন্দিগণের দৃষ্টিভংগীঃ

মাওঃ ইলিয়াস ছিলেন দেওবন্দির আলিম ছিলেন । আর ইলিয়াসি তাবলীগ তারই স্বপ্নে পাওয়া বানাণো ত্বরীকা বা পদ্ধতি (মালফুজাতে ইলিয়াস পৃঃ ৫২)। 

দেওবন্দিগণ বিশ্বাস করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর কবরে জীবন্ত অবস্থায় আছেন। ইহজগতে তাঁর নিকট থেকে যে রকম আদেশ,উপদেশ,নিষেধ ইত্যাদি পাওয়া গেছে; কবর থেকেও তিনি তদ্রুপ কার্যাবলী সম্পাদন করতে পারেন। তাই তো তাদের ফাযায়েলে আমাল,সাদাকাত,দরূদ ও ফাজায়েলে হজ্জে এরকম অসংখ্য ভ্রান্ত উদ্ধৃতিতে পরিপুর্ন।তাঁরা দাবী করেন রাসুল (সাঃ) তাঁর উম্মাহ্‌র অবস্থা সম্পর্কে সচেতন এবং যারা তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে, তিনি বাহ্যিক এবং আধ্যাত্নিকভাবে তাদের সাহায্য করে থাকেন।তারা আরো দাবী করেন যে, তিনি (সাঃ) দেওবন্দি আলিমগণের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন এবং দেওবন্দিগণের থেকে তিনি উর্দূতে কথা বলা শিখেছেন।


দেওবন্দ মাদ্রাসা


সে সময় তিনি রাসুল (সাঃ)কে উর্দূতে কথা বলতে শুনেছেন। এই মহান ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, “আপনি আরব দেশীয় লোক হয়ে উর্দূ কি করে শিখলেন? তিনি (সাঃ) বললেন, “যখন থেকে দেওবন্দি আলিমগণের সাথে আমার যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে, তখন থেকেই আমি এই ভাষা জানি”।   


রাশীদ আহ্‌মেদ গাঙ্গোহী

রাশীদ আহ্‌মেদ গাঙ্গোহী মন্তব্য করেন, এথেকে আমরা এই মাদ্রাসার গুরুত্ব বুঝতে পারি। (আল-বারাহিঁ আল-কাতিয়াহ, পৃঃ ৩০)।


এছাড়াও, দেওবন্দিগণ উপরোক্ত গুনাবলী তাদের মৃত পীর,বুজুর্গ,ওলী এবং তাদের আলিমদের প্রতিও আরোপ করেন, যা তাঁরা তাদের ঐসকল ফাযায়েলর নামে ভেজাল বইগুলোতে অনেক ঘটনা উল্লেখ করেছেন। দেওবন্দিগণের দল এবং ইলিয়াসি তাবলীগ জামা’তের কর্মীদের তাওহীদ সম্পর্কে দূর্বল জ্ঞান, ব্যাপক আকীদাহ্‌গত (বিশ্বাসগত) গলদ বা ভুল ধারণার জন্যই তাদের মধ্যে এই সমস্ত ভ্রান্ত বিশ্বাস জন্য নিয়েছে।
ইনশাআল্লাহ, দেওবন্দিগনের ও ইলিয়াসি তাবলীগ জামাতের ঐ সকল ভ্রান্ত আকীদাহ্‌সমূহের কিছু অংশ সংক্ষেপে একে একে বিশ্লেষন করা হবে আল্লাহর কুরআন ও রাসুলের সুন্নাহ তথা সহীহ হাদিস দ্বারা।

দেওবন্দিগনের ও ইলিয়াসি তাবলীগের দৃষ্টিভঙ্গিঃ [১] প্রকৃত ঈমানদারদের মৃত্যু নেইঃ




ফাযায়েলে সাদাকাত বই






মৃত্যু সবাইকে ছুঁবে, এমন কি নবী-রাসূলদেরকেওঃ

মৃত্যু কোন অভাবিত বিষয় নয়, এমনকি নবী-রাসূলেদের জন্যও। একমাত্র ঈসা (আঃ) ছাড়া সমস্ত নবী-রাসূলগণ মৃত্যুবরন করেছেন।

আল্লাহ্‌ তা’য়ালা মুহাম্মাদ (সাঃ) সম্পর্কে বলেন, “আর (হে মুহাম্মাদ সাঃ!) আর আমি আপনার পূর্বেও কোন মানুষকে চিরস্থায়ী করিনি।আপনি যদি মৃত্যু বরন করেন, তবে এই লোকেরা কি চিরদিন বেঁচে থাকেব? প্রত্যেক জীবকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে। (সুরাঃ আম্বিয়া ২১/৩৪-৩৫)।


আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নবী (সাঃ) যখন করলেন, তখন আবু বক্‌র (রাঃ)[স্বীয় বাস্থান] সুনহায় ছিলেন। বর্নানীকারী ইসমেইল বলেন, ‘সুনহা’ মদীনার উচ্চ এলাকায় অবস্থিত একটি স্থানের নাম। (ইন্তেকালের সংবাদ পাওয়া মাত্র) উমার (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, ‘আল্লাহর কসম! নাবী (সাঃ) ইন্তেকাল করেননি’। ইতিমধ্যে আবু বাকর (রাঃ) এসে পৌঁছে গেলেন এবং নাবী (সাঃ) এর মুখের আবরণ সরিয়ে তাঁর ললাটে চুম্বন করলেন। তারপর বললেন, ‘আমার মাতা-পিতা আপনার জন্য উৎসর্গ হোক, জীবনে-মরণে আপনি পাক-পবিত্র।

সেই সও্বার কস্‌ম! যার হাতে আমার প্রাণ, আল্লাহর আপনাকে দুই মৃত্যুর স্বাদ কখনও গ্রহণ করাবেন না তারপর তিনি বাহিরে এসে উমার (রাঃ) কে লক্ষ করে বললেন, ‘হে কসমকারী! থামো, ধৈর্যাবলম্বন কর (হৈ-হুল্লোড় করোনা)’। আবু বাক্‌র (রাঃ) এর কথা শুনে উমার (রাঃ) বসে পড়লেন।তারপর, আবু বাক্‌র (রাঃ) আল্লাহর প্রসংশা করলেন এবং বললেন, ‘যারা মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উপাসনাকারী, তারা জেনে নাও যে, মুহাম্মাদ (সাঃ) ইন্তেকাল করেছেন, আর যারা আল্লাহর ইবাদাহ্‌ করছো (তারা নিশ্চিত থাক যে) নিশ্চয়ই (তাদের) আল্লাহ্‌ চিরঞ্জীব, তার কখনও মৃত্যূ নেই।

তিনি কুর’আন থেকে তিলাওয়াত করলেন, “মুহাম্মাদ (সাঃ) একজন রাসূল বৈ তো আর কিছুই নন। তাঁর পূর্বে অনেক নাবী-রাসূল (দুনিয়া হতে) বিদায় নিয়েছেন। যদি তিনি ইন্তিকাল করেন, কিংবা তাঁকে হত্যা করা হয়, তবে তোমরা কি অতীতের (বর্বরতার) দিকে ফিরে যাবে?যারা অতীতের(বর্বরতার) দিকে ফিরে যাবে,তারা (নিজেদরাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে) আল্লাহ্‌র এতটুকুমাত্র ক্ষতি করতে পারবে না। আর আল্লাহ্‌ কৃতজ্ঞ বান্দাদেরকে (উত্তম) প্রতিদান দেবেন।(সূরাঃ আল-ইমরান ৩/১৪৪)                       


বর্ণনাকারী ইবনে্‌ আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আবু বাক্‌র (রাঃ) এর কথা শুনে লোকগণ ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো। উমার (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আবু বাক্‌র (রাঃ) এর কথা শুনে এমন ভাবে আমি মাটিতে বসে পড়লাম যেন আমার দু’পা আর আমাকে বইতে পারছে না। তখনই মাত্র আমার বোধোদয় হলো যে, সত্যই মুহাম্মদ (সাঃ) ইন্তেকাল করেছেন।
(বুখারী ৫ম/হাঃ৭৩৩, আর্‌-রাহীক্ব আল-মাখ্‌তুম পৃঃ ৪৮০-৪৮১))

যেহেতু, নাবী-রাসূলগণের ইন্তিকাল অবধারিত; সেহেতু সুফী,পীর,ধার্মিক-দরবেশদের ব্যাপারে এর অন্যথা হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। আল্লাহ কুর’আনে বলেন, “প্রত্যেককেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে (সূরাঃ আল-ইমরান ৩/১৮৫)।

যদি বিশ্বাস করা হয়, সূফী-সাধকরা,পীর,দরবেশরা ইন্তেকাল করেন না, তবে কি তাদেরকে নাবী-রাসূলদের উপরে স্থান দেয়া হয় না? (নাউযুবিল্লাহ) তাছাড়া জীবিত মানুষ্কে দাফন বা কবর দেয়া মহাপাপ।

আল্লাহ বলেন, “যখন জীবন্ত প্রোথিত মেয়েকে (হাশরের দিন) জিজ্ঞেস করা হবে, সে কোন অপরাধে নিহত হয়েছিল? (সূরাঃ তাক্‌ভীর ৮১/৯)