ডা. জাকির নায়েক এ বিষয়টা একাধিক আলোচনায়

৫। ইসলাম ধর্মে চারজন মহিলা নবী এসেছেন। তাঁরা হলেন: বিবি মরিয়াম (আ.), বিবি আছিয়া (আ.), বিবি ফাতিমা (রা.) বিবি খাদিজা (রা)। (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-১, পৃষ্ঠা-৩৫৫)

এখানে জাকির নায়েকের কথাকে চরমভাবে বিকৃত করা হয়েছে। জাকির নায়েক পূর্ববর্তী পৃষ্ঠায় বলেছেন- ‘‘যদি নবী বলতে আপনি বোঝেন যে, যিনি আল্লাহর পক্ষ হতে বাণী গ্রহণ করেন এবং যিনি মানব জাতির নেতা হিসেবে কাজ করেন। সেই অর্থে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, ইসলামে আমরা কোনো নারী নবী পাইনি।’’ এরপর তিনি নবীদের এমন কিছু কথা বলেছেন যা নারীদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমি লেখাটা বড় না করার জন্য তা তুলে ধরতে পারছি না। তিনি এরপর আবার বলেছেন- ‘‘কিন্তু যদি নবী বলতে আপনি বোঝেন যে, এমন এক ব্যক্তি যিনি আল্লাহর পছন্দের এবং যিনি পবিত্র ব্যক্তি, তবে সেখানে কিছু নারীর উদাহরণ রয়েছে।’’ এরপর কুরআনের আয়াতের দ্বারা কয়েক জন নারী সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন। তারপর বলেছেন- ‘‘উপরে উল্লিখিত দৃষ্টিকোণ থেকে ইসলামে চার জন মহিলা নবী এসেছেন। প্রকৃত অর্থে নবী নয়। তারা হলেন, বিবি মরিয়াম (আ.), বিবি আছিয়া (আ.), বিবি ফাতিমা (রা.) ও বিবি খাদিজা (রা)।’’
উক্ত বাক্যে বিরুধীতাকারীরা ‘‘উপরে উল্লিখিত দৃষ্টিকোণ থেকে’’ কথাটা বাদ দিয়ে বাক্যের মূল অর্থকে অন্যদিকে নিয়ে গেছেন। এখানেই শেষ নয়, তিনি এর চেয়েও বড় ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। ‘‘প্রকৃত অর্থে নবী নয়’’ এই গুরুত্বপূর্ণ বাক্যটা পুরোপুরি উধাও করে দিয়ে কথাগুলো নিজের সুবিধা মত সাজিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্য কি?


এছাড়া আরো অনেক অভিযোগের জবাব দেওয়া হলো।

১। আল্লাহকে ব্রাহ্ম-বিষ্ণু প্রভৃতি নামে ডাকা যাবে বলে অভিমত। (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-১, পৃষ্ঠা-২৬৫)
ডা. জাকির নায়েক এ বিষয়টা একাধিক আলোচনায় বললেও কখনোই এককথায় বলেননি যে, ‘‘আল্লাহকে ব্রাহ্ম-বিষ্ণু প্রভৃতি নামে ডাকা যাবে।’’ তাই এমনিভাবে এককথায় বললে যে কারো কাছে কথাটা আপত্তিকর মনে হতে পারে। তাছাড়া এটা ‘আল্লাহ’ নামের পরিবর্তে এই নামে ডাকার কথাও বলেননি। তার এই আলোচনাটা প্রায় এক পৃষ্ঠা, সবটা তুলে ধরলে এই লেখাটা অনেক বড় হয়ে যাবে। তার বক্তব্যের সার কথা- যারা সংস্কৃত ভাষায় কথা বলেন তারা শুধুমাত্র শাব্দিক অর্থে ‘ব্রহ্ম’ (সৃষ্টিকর্তা, আরবী- ‘খালিক’, যা আল্লাহ তায়ালার ৯৯টা গুণবাচক নামের একটি), ‘বিষ্ণু’ (পালনকর্তা, আরবী- রব, যা আল্লাহ তায়ালার আরেকটি গুণবাচক নাম) বলতে পারবেন। তবে এর বাইরে অন্যকিছু বোঝালে অর্থাৎ দেবতা জাতীয় কিছু মনে করে থাকলে বলা যাবে না। আমি তার এই কথার বিরোধিতা করছি না এই জন্য যে, এটা তো আল্লাহ্র গুণবাচক নামের বাইরে যাচ্ছে না। সংস্কৃত ভাষার মানুষেরা তাদের ভাষায় আল্লাহর গুণবাচক নাম ধরে ডাকতে না পারলে আমরা আমাদের বাংলা ভাষায় আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা এবং পালনকর্তা ডাকি কেন?
বিরুধীতাকারীরা ‘‘ আল্লাহকে ব্রাহ্ম-বিষ্ণু প্রভৃতি নামে ডাকা যাবে’’ এই বক্তব্যের আরেকটি তথ্যসূত্র দিয়েছে- লেকচার সমগ্র, ভলিউম-২, পৃষ্ঠা-৩৮০।
২ নং ভলিউমের উক্ত পৃষ্ঠার কোথায় লেখা নেই যে, ‘‘আল্লাহকে ব্রাহ্ম-বিষ্ণু প্রভৃতি নামে ডাকা যাবে’’। সেখানে তিনি (জাকির নায়েক) আল্লাহকে সুন্দর নামে ডাকার কথা বলেছেন। তবে নিজের ইচ্ছেমত নাম নয়, কুরআনে বর্ণিত আল্লাহর ৯৯টি নামের কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন- ‘‘এটা শূন্য থেকে কিছু এনে মানুষের মন ছবিতে বসিয়ে দেয়া নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহর কমপক্ষে ৯৯টি নাম রয়েছে। যেমন: আর-রহমান, আর-রাহিম, আল-জববার, আল কুদ্দুস, আল খায়ের। তিনি ক্ষমাশীল, তিনি পরোপকারী ইত্যাদি। কিন্তু সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য এবং নিখুঁত নাম হলো আল্লাহ’’।

২। দ্বিতীয় অভিযোগ- ‘ইসলামে চারজন মহিলা নবী এসেছেন।’
সায়মা কাদরী নামের এক মহিলার প্রশ্নের ধরন ছিল ‘ইসলামে কোনো মহিলা নবী আসেনি কেন?’ জাকির নায়েক বলেন, ‘‘নবী বলতে যদি আপনি এমন এক ব্যক্তি বোঝেন যিনি আল্লাহ্র পক্ষ থেকে বাণীপ্রাপ্ত হন এবং যিনি মানব জাতির নেতা হিসেবে কাজ করেন, সেই অর্থে এটা নিশ্চিত যে ইসলামে আমরা কোনো নারী নবী পাইনি। এবং আমি মনে করি এটি যথার্থ। কারণ যদি নারীকে নবী হতে হয় তবে সমাজের প্রধান হতে হবে। কিন্তু কুরআনে স্পষ্ট বলা আছে পুরুষ হলো পরিবার প্রধান…। দ্বিতীয়ত, একজন নবীকে নামাজের জামায়াতে ইমামতি করতে হয়…। আরো কিছু ব্যাপার আছে। যেমন একজন নবীকে সর্বক্ষণ সকল সাধারণ মানুষের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতে হয়। …যদি মহিলা নবী হতো এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সে যখন গর্ভবতী হতো, তখন তার পক্ষে কয়েক মাস নবুওয়তের স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন কোনোভাবেই সম্ভব হতো না।’’ এবার তিনি বলেন ‘‘কিন্তু নবী বলতে যদি এমন একজন ব্যক্তি বোঝান যিনি আল্লাহর পছন্দের এবং যিনি পবিত্র ও খাঁটি, তবে সেখানে কিছু নারী রয়েছেন (পৃ. ২৬০)্এর পর ৪জন বিবি মরিয়ম, বিবি আছিয়া, বিবি খাদিজা, ইত্যাদির নাম বলেছেন ।’’ বুঝা যাচ্ছে প্রশ্নকারী মহিলার আক্ষেপ ছিল নারীরা বোধ হয় নবীর সম্মান ও মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জাকির নায়েক সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বক্তব্য রেখেছেন। তবে আমি বলবো নবী শব্দটাকে মহিলার সাথে জুড়ে না দিয়ে আরো স্পষ্ট করার দরকার ছিল। কিন্তু এই বক্তব্যের পর আমার মনে হয় না তিনি ভ্রামত্ম বা উদ্দেশ্য খারাপ।

৩। পবিত্র কুরআর শরিফের মধ্যে ব্যাকরণগত ভুল আছে বলে স্বীকার। (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-১, পৃষ্ঠা-৫১২)
এই কথাটা শুনলেই মনে হবে ডা. জাকির নায়েক পবিত্র কুরআন শরিফের ভুল ধরেছেন। প্রকৃত অর্থে তা নয়। তিনি বলেছেন- ‘‘কুরআনের ব্যাকরণ এতই উচ্চমানের যে, এটা আরবী ব্যাকরণের প্রচলিত বই থেকে উন্নততর।’’ বর্তমান প্রচলিত আরবী ব্যাকরণ দিয়ে যাচাই করলে কুরআনের আলোচ্য শব্দটি ‘‘রাসূলদের’’ না হয়ে ‘‘রাসূল’’ হওয়ার কথা। এই অমিলটা তিনি আরবী ব্যাকরণের সীমাবদ্ধার কথাই বলেছেন। তিনি উপরেই বলেছেন ‘‘আপনি কি ভুলকৃত ব্যাকরণ দিয়ে কুরআন যাচাই করবেন? অবশ্যই না।’’ পরের অংশটি আমি হুবহু তুলে ধরছি- ‘‘পবিত্র কোরআনের সৌন্দর্য হচ্ছে কোরআন কেন ‘রাসূল’ শব্দের পরিবর্তে ‘রাসূলদের’ শব্দের ব্যবহার করেছে সেটা। আপনারা জানতে পারবেন এটা কেন করা হয়েছে? কারণ, আমরা জানি যে, সকল রাসূলের মৌলিক বাণী একই রকম ছিল। যেমন, প্রভু একজন। হযরত লুত (আ.) এর জাতির লোকেরা রাসূলকে প্রত্যাখ্যান করেছিল এ কথার দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, হযরত লুত (আ.)- কে প্রত্যাখ্যান করে প্রকারামেত্ম তারা পরোক্ষভাবে সকল রাসূলকেই প্রত্যাখ্যান করেছে। দেখুন সৌন্দর্য কাকে বলে? দেখুন, অলঙ্কারিত্ব আলহামদুলিল্লাহ।’’ এবার পাঠক আপনারাই বলুন এখানে কুরআন শরিফের ভুল দেখানো হয়েছে নাকি বর্তমানের প্রচলিত আরবী ভাষার ব্যাকরণের ভুলের কথা বলা হয়েছে।


কোরআনে ভুল নিয়ে আরো একটি প্রশ্নের উত্তর। “হুবহু তুলে ধরা হলো”
লেকচারে ডা উইলিয়াম কেম্পেল বললেন যে কোরআনের কথা অনুযায়ী এলাইজা যুদ্দে জিতলেন আর বাইবেলের কথা অনুযায়ী এলাইজা যুদ্ধে হারলেন, সে যাইহোক তার মানে এই না যে বাইবেল ঠিক আর কোরআন ভুল, যদি বাইবেল আর কোরআনে আলাদা কথা থাকে আপনি ধরেই নিচ্ছেন বাইবেল ইশ্বরের কথা যদি দুটো গ্রন্থ ভালো ভাবে দেখেন তাহলে এটাও হতে পারে যে কোরআন ঠিক আর বাইবেল ভুল এটাও হতে পারে যে বাইবেল ঠিক আর কোরআন ভূল, এও হোতে পারে যে দুটোই ঠিক আর এও হোতে পারে যে দুটোই ভুল। আমাদের যেটা করতে হবে, যদি জানতে চাই কোন সঠিক আর কোনটা ভুল তাহলে দেখতে হবে এই সম্পর্কে বাহিরের কেউ কি বলে যে কথাটা সত্যি। যেতেতু বাইবেল বলছে এলাইজা হেরে গেছে কোরআন বলছে এলাইজা জিতি গেছে তাই কোরআন ভুল বলতে এই কথা অযুক্তিক আর ডা উইলিয়াম কেম্বল কোরআন নিয়ে বেশ কয়েকটা কথা বলেছেন, সময়ের অভাবে উত্তর দেইনি, এখন সেগুলোর উত্তর দিবো।আমি এখানে আরে চয় সাতটা পয়েন্টের কথা বলবো যেগুলো নিয়ে আগে বলিনি, ইনশা আল্লা আমি সংক্ষেপে উত্তর দিবো। তিনি বললেন যে কোরআনে আছে, আমার কথা অনুযায়ী আমার ভিডিওটাও দেখালেন ভাই সাব্বির আলীর কথা অনুযায়ী যে চাদের আলো আসলে একটা প্রতিবিম্ব, তার মতে কোরআনে এটা বলা হয়নি। উদৃতি দেই আবারও, পবিত্র কোরআনে সুরা ফোরকানের ৬১ নম্বর আয়াতে উল্লেখ আছে যে, কত মহান তিনি যিনি নভমন্ডলে সৃষ্টি করিয়াছেন রাশি চক্র, উহাতে স্থাপন করিয়াছেন প্রদিপ, সূর্য এবং চন্দ যার আছে ধার করা আলো , মুনির, এখানে চাদের যে আরবি শব্দটা সেটা কামার এর আলোক সব সময় বলা হয় মুনির বা নুর, যার আর্থ প্রতিবিম্বীত আলো.............(ইত্যাদি) এই ভাবে ডা জাকির বাকি চয়টি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সবার সামনে প্রমান করেছেন কোরআনে কোন প্রকার ভুল নাই,

৩। হিন্দুদের রাম এবং কৃষ্ণ সম্পর্কে ইসলামের নবী হওয়ার সম্ভাবনা প্রকাশ। (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-২, পৃষ্ঠা-১৬২)
ঈসা (আ.) আমাদের নবী। তাঁর উপর যে ওহী অর্পিত হয় তার নাম ইঞ্জিল। এই একই ব্যক্তি একই গ্রন্থ প্রাপ্ত হয়েও দুই ধর্মের অনুসারীদের কাছে দু্ই রকম আদর্শের ধর্মনেতা। ইঞ্জিল শরীফকেই বাইবেল বলা হলেও বর্তমানের বাইবেলকে আমরা আল্লাহর বাণী বলে স্বীকার করি না। কারণ, এটাতে পরিবর্তন, পরিবর্ধন হয়েছে। তবে এটা মানি যে, এর মধ্যে ইসলামের অনেক কথা এখনও আছে। বেদের মধ্যে কুরআনের বেশ কিছু কথার মিল থাকার কারণে অনেক মুসলমান দাবী করেন এটা কোনো এক সময় আল্লাহর বাণী ছিল, যা বাইবেলের মত করে পরিবর্তিত হয়ে আজকের অবস্থায় এসেছে। এমনিভাবে রাম এবং কৃষ্ণ মুসলমানদের নবী ছিল, যা আজ যীশুর মত অন্য নামে অন্য আদর্শের ধর্মনেতা। এই প্রেক্ষাপটে তিনি (জাকির নায়েক) বলেছেন- ‘‘আল কুরআন বলে যে, ইঞ্জিল হলো ওহী, যা ঈসা (আ.) কে প্রদান করা হয়েছিল। এটা হলো সেই ওহী, যা যীশুকে প্রদান করা হয়েছিল। সুতরাং ইঞ্জিল আল্লাহর বাণী হওয়ার ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। নবীদের ব্যাপারে? অনেক নবী ছিলেন। রাম ও কৃষ্ণের নবী হওয়ার ব্যাপারে, আমরা বলতে পারি হতে পারে, তবে আমরা নিশ্চিত নই। কিছু মুসলমান আছেন, তারা বলেন, ‘রাম আলাইহিস সালাম’। এটা ভুল। দেখুন তারা তাদের পিঠ চাপড়াচ্ছে। আমি হিন্দুদের পিঠ চাপড়ানোর পক্ষে নই।’’
বিচ্ছিন্নভাবে এ কথা বলা হলে খারাপ মনে হওয়া স্বাভাবিক। তাই প্রেক্ষাপট সহকারেই বলা দরকার। কিন্তু বিরুধীতাকারীরা বিচ্ছিন্নভাবেই কথাটি তুলে ধরেছে, যা শুনতে যে কারো কাছেই খারাপ লাগবে।

৪। হিন্দুদের ‘বেদ’ বইটা আল্লাহপাকের বাণী হতে পারে। (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-২, পৃষ্ঠা-১৬২)
ওখানে লেখা ছিল ‘‘মূল বেদ হয়তো আল্লাহর বাণী হতে পারে।’’ বিরুধীতাকারীরা ‘মূল’ শব্দটি বাদ দিয়ে উপস্থাপন করেছে। এখানে ‘মূল’ শব্দটা অনেক গুরুত্ব বহন করে। শুধু বেদ বলতে বর্তমানের বেদকে বুঝায়। তিনি এই বেদ বইটাকে আল্লাহর বাণী বলেননি। এখানে একটু ব্যাখ্যা প্রয়োজন। ইঞ্জিল শরীফকে বাইবেল বলা হলেও মুসলমানরা এটাকে আল্লাহর বাণী হিসাবে স্বীকার করে না। কারণ, এটা মূল অবস্থায় নেই। এটাতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। তিনি বেদের মধ্যে কুরআনের কিছু সাদৃশ্য উল্লেখ করেছেন, ‘‘খোদা মাত্র একজন, কোনো দ্বিতীয় নেই, সামান্যতেও নেই। …সকল প্রশংসা শুধু তারই।… খোদা একজনই, তাঁর পূজা করো। আমরা এতে বিশ্বাস করি। বেদের এসব অংশে বিশ্বাস করতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’’

পরিবর্তন হওয়ার কারণে আমরা যেমন বর্তমানের বাইবেলকে আল্লাহর বাণী বলি না, তেমনিভাবে কুরআনের সাথে মিল থাকার পরও বেদকেও আল্লাহর বাণী বলা যাবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন- ‘‘যেখানে মানব কর্তৃক সংযোজন হয়ে থাকতে পারে, সেগুলোকে আমরা খোদার বাণী হিসেবে গ্রহণ করতে পারি না। বাইবেলে যেমন অবৈজ্ঞানিক ঘটনা আছে, বেদেও সেরকম আছে’’।

সুতরাং এক বাক্যে যদি বলা হয় জাকির নায়েক বলেছে- ‘‘হিন্দুদের ‘বেদ’ বইটা আল্লাহপাকের বাণী হতে পারে’’। তবে এর প্রকৃত রূপ প্রকাশ না পেয়ে উল্টো বিভ্রামিত্ম ছড়াবে।


৫। ইসলাম ধর্মে চারজন মহিলা নবী এসেছেন। তাঁরা হলেন: বিবি মরিয়াম (আ.), বিবি আছিয়া (আ.), বিবি ফাতিমা (রা.) বিবি খাদিজা (রা)। (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-১, পৃষ্ঠা-৩৫৫)

এখানে জাকির নায়েকের কথাকে চরমভাবে বিকৃত করা হয়েছে। জাকির নায়েক পূর্ববর্তী পৃষ্ঠায় বলেছেন- ‘‘যদি নবী বলতে আপনি বোঝেন যে, যিনি আল্লাহর পক্ষ হতে বাণী গ্রহণ করেন এবং যিনি মানব জাতির নেতা হিসেবে কাজ করেন। সেই অর্থে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, ইসলামে আমরা কোনো নারী নবী পাইনি।’’ এরপর তিনি নবীদের এমন কিছু কথা বলেছেন যা নারীদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমি লেখাটা বড় না করার জন্য তা তুলে ধরতে পারছি না। তিনি এরপর আবার বলেছেন- ‘‘কিন্তু যদি নবী বলতে আপনি বোঝেন যে, এমন এক ব্যক্তি যিনি আল্লাহর পছন্দের এবং যিনি পবিত্র ব্যক্তি, তবে সেখানে কিছু নারীর উদাহরণ রয়েছে।’’ এরপর কুরআনের আয়াতের দ্বারা কয়েক জন নারী সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন। তারপর বলেছেন- ‘‘উপরে উল্লিখিত দৃষ্টিকোণ থেকে ইসলামে চার জন মহিলা নবী এসেছেন। প্রকৃত অর্থে নবী নয়। তারা হলেন, বিবি মরিয়াম (আ.), বিবি আছিয়া (আ.), বিবি ফাতিমা (রা.) ও বিবি খাদিজা (রা)।’’
উক্ত বাক্যে বিরুধীতাকারীরা ‘‘উপরে উল্লিখিত দৃষ্টিকোণ থেকে’’ কথাটা বাদ দিয়ে বাক্যের মূল অর্থকে অন্যদিকে নিয়ে গেছেন। এখানেই শেষ নয়, তিনি এর চেয়েও বড় ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। ‘‘প্রকৃত অর্থে নবী নয়’’ এই গুরুত্বপূর্ণ বাক্যটা পুরোপুরি উধাও করে দিয়ে কথাগুলো নিজের সুবিধা মত সাজিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্য কি?


৬। ৪। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর রওযা শরিফের ভিতরে মৃত। (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-৫, পৃষ্ঠা-৯৫)

এ প্রসঙ্গে জাকির নায়েক বলেন- ‘‘পবিত্র কুরআনের সূরা বাকারায় আছে- ‘আল্লাহর পথে যারা নিহত হয় তাদেরকে মৃত বলো না; বরং তারা জীবিত।’ এখানে অনেকে বলতে পারেন, তাহলে তারা তো বেঁচে আছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারবো। এখন যদি এই শহীদগণ জীবত হন তাহলে তো আমাদের নবীজীও বেঁচে আছেন। খুব সুন্দর যুক্তি। কিন্তু সাহাবীগণ এটাকে কীভাবে বুঝেছিলেন? তারা কি ধরে নিয়েছিলো যে, নবীজী বেঁচে আছেন? তারা তো নবীজী (সা.) এর জানাযার নামায পড়েছেন, তাঁকে কবরস্থ করেছেন। এছাড়া সাহাবীগণ যুদ্ধের ময়দানে সাথীদেরকে কবর দিয়েছেন, তাদের জানাযা পড়েছেন। জীবিত কারো জানাযা নামায কি পড়া যায়? উত্তর হবে- না, জীবিত কারো জানাযা নামায পড়া যায় না। এখানে কুরআনের আয়াত বলছে- শত্রুরা যখন উল্লাস করে বলে, ‘তোমাদের লোকদের মেরেছি; তবে তাদের সাথে পরকালে দেখা হবে। আর তারাই হবেন লাভবান। এখানে শারীরিকভাবে বেঁচে থাকার কথা বলা হচ্ছে না। যদি শারীরিকভাবে জীবিত থাকবেন তাহলে সাহাবীগণ তাদের কবর দেবেন কেন?’’
খেয়াল করলে দেখা যাবে বোল্ড করা বাক্যটায় এর প্রকৃত তাৎপর্য নিহীত আছে।

৭। পবিত্র কুরআন স্পর্শ করার জন্য কোনো অজুর প্রয়োজন নেই। (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-২, পৃষ্ঠা-৬২৬)
এখানে কথাগুলো ঠিক এভাবে আসেনি। বইতে যেভাবে আছে আমি তা তুলে ধরছি- ‘‘যদি শেষ বিচার দিনে মহান আল্লাহ আমাকে কৈফিয়ত তলব করেন আরবিসহ কুরআন কেন আমি অমুসলিমদের দিয়েছি, তাতেও আমার ভয়ের কারণ নেই। কেননা আমি নিশ্চিতভাবেই জানি মুহাম্মদ (সা.) কে আমার পক্ষে পাব। তিনি নিজেই বিভিন্ন সময় অমুসলিম বাদশাহদের নিকট আরবি ভাষায় লিখিত পত্র প্রেরণ করতেন যার মধ্যে কোরআনের আয়াতও থাকতো। আবিসিনিয়ার বাদশাহ সম্রাট হিরাক্লিয়াস, ইমেমেনের রাজা, মিসরের বাদশাহের নিকটেই মহানবী (সা.) এমন পত্র দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক ইসলাম গ্রহণ করলো, কেউ কেউ পত্র ছিন্ন করে, অনেকেই পদতলে পিষ্ট করলো। তাই মহান আল্লাহ যদি সত্যিই আমাকে অভিযুক্ত করে তবে মহানবী (সা.) কে অবশ্যই কাছে পাব। এ ধরনের একটি পত্র এখনো ইসত্মাম্বুলের একটি জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। এ পত্রে সূরা আল ইমরানের আয়াত নং ৬৪ তে স্পষ্টভাবেই লিপিবদ্ধ আছে।’’
৮। হায়েজ নেফাস অবস্থায় মহিলারা পবিত্র কুরআন স্পর্শ করতে পারবে।
এ কথার কোনো তথ্যসূত্র বিরুধীতাকারীরা দিতে পারেনি।

(৯) আরবী"হুর"শব্দটির অপ-ব্যাখ্যা ,

(১০) হাদীস শরীফের অর্থ বিকৃতি করে ভ্রান্ত মতবাদ

(১১) দাজ্জাল সম্পর্কে মন গড়া ভ্রান্ত মতবাদ
উক্ত ৯, ১০, এবং ১১ নং অভিযোগের কোন দলিল না দেয়াতে তার উত্তর দেওয়া সম্বব হচ্ছেনা। তাই দলিল প্রয়োজন।


১২। একই দিন ঈদ ও জুমআ হলে জুমআর নামাজ পড়ার দরকার নেই। (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-৫, পৃষ্ঠা-৪৭৬)
এ প্রসঙ্গে জাকির নায়েক বলেন- ‘‘জুমার দিনে আগে ঈদের নামাজ আদায় করলে পরে জুমার নামাজ আদায় করা আর না করা ঐচ্ছিক ব্যাপার। সুতরাং এ গুলোই ঈদের নামাজের পদ্ধতি। (আবু দাউদ, অধ্যায়- সালাত, হাদীস নং ১০৬৮)’’
এখানে তিনি যে হাদীসটার কথা বলেছেন তা আমার দেখা হয়নি। তবে মনে করি উক্ত হাদীসে সে রকম নিয়মের কথা আছে বলেই তিনি এই হাদীসটার কথা এখানে উল্লেখ করেছেন।
(১৩) ঈদের নামাযে অতিরিক্ত ১২ তাকবীর দিতে হবে
এই কথাটির তথ্য সুত্র নেই।


১৪। তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ এক ই নামায
সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা কাউন্সিলের সাবেক প্রধান মুফতী সম্মানিত শাইখ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রঃ)কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তারাবী, কিয়ামুল লাইল এবং তাহাজ্জুদের মধ্যে পার্থক্য কি?
উত্তরঃ
সম্মানিত শাইখ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রঃ) বলেনঃ রাতের নামাযকে তাহাজ্জুদ বলা হয়। একে কিয়ামও বলা হয়। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَكَ
আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়, ওটা তোমার জন্য নফল। (সূরা বানী ইসরাঈলঃ ৭৯) আল্লাহ তাআলা আরও বলেনঃ
يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ قُمِ اللَّيْلَ إِلا قَلِيلًا
ওহে চাদরে আবৃত (ব্যক্তি), রাতে সালাতে দাড়াও, রাতের কিছু অংশ বাদে। (সূরা মুজাম্মেলঃ ১-২) আল্লাহ তাআলা আরও বলেনঃ
آخِذِينَ مَا آتَاهُمْ رَبُّهُمْ إِنَّهُمْ كَانُوا قَبْلَ ذَلِكَ مُحْسِنِينَ كَانُوا قَلِيلًا مِنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ
তাদের প্রতিপালক যা তাদেরকে দিবেন, তা তারা ভোগ করবে, কারণ তারা পূর্বে (দুনিয়ার জীবনে) ছিল সত কর্মশীল। তারা রাত্রিকালে খুব কমই শয়ন করত। (সূরা আয-যারিয়াতঃ ১৬-১৭)
আর মানুষের উপর সহজ করে এবং বেশী দীর্ঘ না করে রামাযান মাসে রাতের প্রথম ভাগে কিয়ামুল লাইল করাকে আলেমদের পরিভাষায় তারাবী হিসেবে নাম করণ করা হয়। একে তাহাজ্জুদ এবং কিয়ামুল লাইল হিসেবে নাম করণ করাও জায়েয আছে। এতে কোন অসুবিধা নেই। আল্লাহই তাওফীক দাতা
আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায
আরবীতে পারদর্শী ভাইদের জন্য ফতোয়ার লিংক দেয়া হল। অনুবাদে ভুল হয়ে থাকলে জানাবেন বলে আশা রাখি।

(১৫) তারাবীহ নামায শুধু ৮ রাক আত আদায় করতে হবে
.......................
৮ রাকাত তারাবি নয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। তাবে ডা জাকির নিম্ন হাদিসের ভিক্তিতে কথাটা বলেছেন।
.......................................................................................................
আয়েশা রাঃ হতে বর্নিত রাসুল সাঃ রমযান সহ অন্য সময় বিতর সহ এগার রাকাতের বেশী পড়েননি ।বুখারি ৩য় খণ্ড তারাবীহ অধ্যায় ১৮৮১ মুসলিম ৩য় খণ্ড ১৫৯৩
......................................................................................................
যাবির বিন আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত রাসুল সাঃ সাহাবিদের কে ৮ রাকাত তারাবীহ পড়ালেন সহি ইবনে হিব্বান ও সহি ইবনে খুয়ায়মার বরাতে নাসবুর রায়াহ ১ম খণ্ড ২৭৬ পৃঃ
উবাই বিন কাব রাঃ বলেন তিনি রামযান মাসে ঘরে মহিলাদের ৮ রাকাত নামাজ পড়ালেন ।রাসুল সাঃ ইহা শ্রবণ করিয়া সম্মতি সুচক মৌনতা অবলম্বন করলেন।কিয়ামুল লায়ল ৯০ পৃঃ – তাবারানী সগির ১০৮ পৃঃ – সালাতুত তারাবীহ আলবানী ১৮ পৃঃ


(১৬) ফজরের আযানের পর সাহরী খাওয়া যাবে বলে ভ্রান্ত মতবাদ
(১৭) ভূল অজ্ঞতা বা বাধ্যতার কারনে রোযা না ভাঙ্গার ভ্রান্ত মতবাদ
১৬ ও ১৭ নং অভিযোগের দলিল প্রয়োজন। দলিল ছাড়া উত্তর দিতে সময় লাগবে। তবে পালাবোনা, আজ বা কাল উত্তর দেওয়া হবে। ইনশা আল্লাহ।


১৮। পুরুষ ও মহিলাদের নামাজের পদ্ধতি একই। (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-১, পৃষ্ঠা-৫৮০)
১ নং ভলিউমের ৫৮০ পৃষ্ঠার কোথাও লেখা নেই যে ‘‘পুরুষ ও মহিলাদের নামাজের পদ্ধতি একই।’’ বরং সেখানে পুরুষ ও মহিলাদের দুই ধরনের নিয়মের কথাই লেখা আছে এভাবে- ‘‘নামাযে নারী ও পুরুষ এক স্থানে হাত বাঁধেন না, বরং পুরুষ নাভীর নিচে এবং নারী বুকের ওপরে হাত বাঁধেন।’’ বইয়ের কথার সাথে বিরুধীতাকারীদের কথার কোনো মিল নেই।
এর পর নাবির উপরে হাত ভাদা আর নিচে হাত বাধা নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ উল্লেখ রয়েছে।


১৯।জুমআর খুতবা আরবিতে হওয়া জরুরী নয়।
এই কথাটা নিয়ে অনেক আলেমদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। এই কথাটার তথ্য সুত্র না থাকায় সঠিক তথ্যটা তুলে ধরা বা ডা জাকির কোন দৃষ্টি কোন থেকে কথাটা বলেছেন তা তুলে ধরতে পারছিনা।


২০। (২০) ৩ তালাক কে ১ তালাক বলে ভ্রান্ত মতবাদ
এই কথাটার কোন তথ্য সুত্র নাই।

২১। মহিলাদের চেহারা না ঢাকলেও পর্দা হয়ে যাবে।
এ কথার কোনো তথ্যসূত্র বিরুধীতাকারীরা দিতে পারেনি।

২২। প্যান্ট, শার্ট ও টাই এগুলো নামাজের পোশাক। (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-২, পৃষ্ঠা-৫৪)
এখানেও কথাটা বিকৃতভাবে বলা হয়েছে। ‘‘প্যান্ট, শার্ট ও টাই এগুলো নামাজের পোশাক’’ এ কথা বলা হয়নি, বলা হয়েছে প্যান্ট, শার্ট ও টাই পরে নামাজ পড়া যায়। এই দু’টি কথার মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য আছে। আমি উক্ত পৃষ্ঠার কথাগুলো হুবহু তুলে ধরছি। ‘‘সহীহ হাদীসে রয়েছে আপনি যেটাতে আরাম বোধ করবেন সেটা পরবেন। যদি আপনি পশ্চিমা ব্যক্তিকে কোর্তা পায়জামা পরতে বলেন তাহলে সে নামাযে এদিক সেদিক নড়াচড়া করবে। যদি কোনো গ্রামের মানুষকে কোর্ট টাই পরতে বলেন তাহলে সে স্বসিত্ম পাবে না। তাহলে আপনি যদি সালাতে পোশাকের ন্যূনতম অংশ পূরণ করেন যেটা বলা আছে সহীহ হাদীসে, সে শর্ত মেনে আপনি যে কোনো পোশাক পরতে পারেন। তবে সেটা ইসলামী শরীয়াহ্র বিরুদ্ধে যাবে না। যদি সে পোশাকটা শরীয়াহ অনুযায়ী হয়ে থাকে আপনি সেটা পরতে পারেন। তবে গলায় যেন কাপড় ঝুলানো না থাকে। এটা পরে আপনি সালাত আদায় করতে পারেন না। কারণ এটা হারাম। তবে পোশাকটা যদি হারাম না হয় সব শর্ত পূরণ করে তাহলে আপনি কোর্তা, প্যান্ট, শার্ট যেটা পরে আরাম পান সেটা পরতে পারেন।’’

২৩। কাকড়া ও কচ্ছপ খাওয়া হালাল
এই কথাটির কোন তথ্য সুত্র নাই।

২৪। ডাঃ জাকির নায়েক বলেন- মহিলাদের মসজিদে গিয়ে নামায পড়তে কোন অসুবিধা নাই (লেকচার সমগ্র, ভলিউম-১, পৃষ্ঠা-৩৫৫)
উল্লিখিত পৃষ্ঠার কোথাও এ বিষয়ে কোনো কথা বলা হয়নি। উক্ত পৃষ্ঠায় নারীদের নবী হওয়া না হওয়া প্রসঙ্গেআলোচনা করা হয়েছে, যা ৫ নং অভিযোগে উঠে এসেছে। নিশ্চিত না হয়েই এমন ভুল তথ্যসূত্র দেয়া বিরুধীতাকারীরা চরম ভন্ডামি এবং ফেতনাবাজি করেছেন।
সকলের অবগতির জন্য সেই অভিযোগটি আবার পেষ্ট করলাম।
(৫) ইসলামে ৪ জন মহিলা নবী এসেছেন, তারা হলেন- বিবি মরিয়ম (আঃ), বিবি আছিয়া (আঃ), বিবি ফাতেমা (রাঃ) ও বিবি খাদীজা (রাঃ) ।

২৫। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর একাধিক বিবাহে রাজনৈতিক পয়দা হাসিলের জন্য।
এখানে ডা জাকিরের বক্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে। জাকির নায়েক তার "ইসলামে নারীর অধিকার" শীর্সক আলোচনায় এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন "প্রিয় নবী (স) এর একাধীক বিবাহের অনেকগুলো কারন ও যোক্তিক পয়েন্ট ছিলো। তার মধ্যে একটি ছিলো জনকল্যান ও সমাজ সেবা। যেমন হযর খাদিজা (র) এর সাথে বিবাহ, প্রিয় নবী (স) এর দুটি বিবাহ ছিলো স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে, একজন হযরত খাদিজা র. অপর জন হযরত আয়শা র. । এছাড়া মহানবীর প্রত্যেকটি বিবাহ ছিলো বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে। হয়তো সমাজের কোন সংস্কার, বিভিন্ন যোত্রের সাথে ভ্রাতৃত্বপূর্ন সম্পর্ক সৃষ্টি কিংবা রাজণৈতিক ও ভৌগলিক কারন"।
এই পুরা বক্তর্বের মাঝখান থেকে "রাজনৈতিক পয়দা হাসিলের জন্য" বলে বিকৃত উদ্ধৃতি নিশ্চন্দেহে অনুচিত। আর রাসুল (স) এর একাধিক বিবাহের মধ্যে কোনটির যদি রাজণৈতিক বিচোক্ষনতা থেকেই থাকে তাহলে তার এতো বিরুধীতা কেন এতো গুরুত্ব পূর্ন হয়ে গেলো?? এটাকি কেবল বিরুধীতার জন্য বিরুধীতা??

(২৬) ডাঃ জাকির নায়েক বলেন ঃ ক্বাযা নামায পড়া লাগে না ।
এটি ডা জাকির নায়েকের রিবুধ্যে সম্পূর্ন মিথ্যা তথ্য। কাজা নামাজ আর উমুরি কাজা নামাজ দুটি আলাদা আলাদা বিষয়। জাকর নায়েক তার কোন লেকচারেই কাজা নামাজের বিপক্ষে বলে নাই। তবে উমুরী কাজা মাজারে ব্যাপারে শুধু ডা জাকির নয় আরবের আরো অনেকের ভিন্ন মত আছে। দীর্ঘ সুত্রতা পরিহার করে উভয় পক্ষ দলিল দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে তার সাথে আমাদের দ্বিমত থকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে উমুরি কাজা নামাজের "উমুরী" শব্দটা বাদ দিয়ে শুধু মাত্র "কাজা" নামাজ বলে চালিয়ে দেওয়া প্রকাশ্যে অন্যায় এবং ভন্ডামি।

(২৭) বিশ্ব-বিখ্যাত যুগশ্রেষ্ঠ তাবেয়ী ও শ্রেষ্ট ফকীহ ইমাম আযম আবু হানীফা (রাহঃ) সম্পর্কে মিথ্যা অপবাদ ও মিথ্যা অপ-প্রসার ।
এই অভিযোগটি কোন তথ্য সুত্র নাই। তাই আশা করছি বিরুধীতাকারীরা উক্ত কথার তথ্য সূত্র দিবেন। সেই সংঙ্গে অবশ্যই জানাতে হবে কি কি মিথ্যা অপবাদ দিয়েছেন আর কোথায় কোথায় অপ-প্রসার করেছেন। যদি দিতে না পারে তাহলে বুঝতে হবে ডা জাকির কখনোই ঐ সব কথা বলেনাই, অথবা যেই ভাবে অভিযোগ করা হয়েছে সেই ভাবে বলেনাই। বরং তার কথা বিকৃত করা হয়েছে ফেতনা সৃষ্টির জন্য।

২৮। নং প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য ভলিয়াম নং-৫, পৃষ্ঠা=৯২ খুজতে হবে। ঐ ভলিউমটি আপাতত আমার কাছে নেই। আশা করি সঠিক তথ্য জানাতে পারবো।

(২৯) ডাঃ জাকির নায়েকের সমাবেশে একসাথে নারী-পুরুষ, খৃষ্টান ধর্ম ও হিন্দু ধর্মের ব্যপক প্রচার ও ব্যপক প্রসার
..................................................................................................
ডা জাকিরের সমাবেশে এক সাথে কোন মোসলামন নারি পুরুষ বসেনা। সবার জন্য আলাদা আলাদা সারি থাকে। তবে অন্যধর্মালম্বিরা এক সাথে বসতে দেখা যায়। কারন অন্যধর্মালম্বিদের পৃথক ভাবে বসতে বলার অধিকার ডা জাকির নায়েকের নাই। কারন তাদের উপর পর্দা ফরজ হয়নাই। তবে এমন কোন প্রমান পাওয়া যাবেনা যে, কোন নারি ইসলাম গ্রহন করার পর এক সাথে সেই আগের মত পুরুষদের সাথে বসেছেন। বিস্তারিজন নাজার জন্য পি,এস টিভি দেখুন।

(৩০) কাফির শিয়া ও সুন্নীদের মধ্যে পার্থক্য টা শুধু মাত্র"রাজনৈতিক", আক্বীদা গত নয় ।
..................................................................................................
এই কথাটার তথ্য সুত্র দরকার ছিলো। যাই হোক, এখানে আমি কিছু কথা বলতে চাই। এখানে কোন এক দিক থেকে রাজণৈতিক সমস্যা থাকতেই পারে। তবে তিনিযে, বলেছেন "শুধু মাত্র রাজনৈতি এবং আক্বীদা গত নয়" এই কথাটা বিশ্বাস করতে পারছিনা। এখানে হয়তো তার নামে সেই রকম ভাবে মিথ্যা বলা হয়েছে, যেই রকম অনেক উদাহরন আমি উপরে দিয়েছি। যাইহোক যেহেতু অভিযোগটির তথ্য সুত্র নাই সেহেতু আমি সঠিক উত্তর দিতে বাধ্য নই। তবে তথ্য সুত্র দিলে আমি উত্তর দিবো ইনশা আল্লাহ।


(২৯) ডাঃ জাকির নায়েকের সমাবেশে একসাথে নারী-পুরুষ, খৃষ্টান ধর্ম ও হিন্দু ধর্মের ব্যপক প্রচার ও ব্যপক প্রসার
ডা জাকিরের সমাবেশে এক সাথে কোন মোসলামন নারি পুরুষ বসেনা। সবার জন্য আলাদা আলাদা সারি থাকে। তবে অন্যধর্মালম্বিরা এক সাথে বসতে দেখা যায়। কারন অন্যধর্মালম্বিদের পৃথক ভাবে বসতে বলার অধিকার ডা জাকির নায়েকের নাই। কারন তাদের উপর পর্দা ফরজ হয়নাই। তবে এমন কোন প্রমান পাওয়া যাবেনা যে, কোন নারি ইসলাম গ্রহন করার পর এক সাথে সেই আগের মত পুরুষদের সাথে বসেছেন। বিস্তারিজন নাজার জন্য পি,এস টিভি দেখুন।

(৩০) কাফির শিয়া ও সুন্নীদের মধ্যে পার্থক্য টা শুধু মাত্র"রাজনৈতিক", আক্বীদা গত নয় ।
এই কথাটার তথ্য সুত্র দরকার ছিলো। যাই হোক, এখানে আমি কিছু কথা বলতে চাই। এখানে কোন এক দিক থেকে রাজণৈতিক সমস্যা থাকতেই পারে। তবে তিনিযে, বলেছেন "শুধু মাত্র রাজনৈতি এবং আক্বীদা গত নয়" এই কথাটা বিশ্বাস করতে পারছিনা। এখানে হয়তো তার নামে সেই রকম ভাবে মিথ্যা বলা হয়েছে, যেই রকম অনেক উদাহরন আমি উপরে দিয়েছি। যাইহোক যেহেতু অভিযোগটির তথ্য সুত্র নাই সেহেতু আমি সঠিক উত্তর দিতে বাধ্য নই। তবে তথ্য সুত্র দিলে আমি উত্তর দিবো ইনশা আল্লাহ।

(৩১) ২ ওয়াক্ত নামায কে একত্রিত করণ সম্পর্কে ভ্রান্ত মতবাদ
এই প্রশ্নটির উত্তর আমি দলিল সহ দিচ্ছি। আমি জানি ২ ওয়াক্ত নামাজ একত্রে পড়া জায়েজ। তবে এতে ডা জাকির কোন ধরনের ভ্রান্ত মতবাদ প্রচার করেছে তা জানিনা কারন এই কথাটারও তথ্য সূত্র দেওয়া হয়নাই।
ব্লগ থেকে কপি করা:
১)
عن ابن عباس قال: جمع رسول الله –صلى الله عليه وسلم- بين الظهر والعصر والمغرب والعشاء بالمدينة في غير خوف ولا مطر
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল (সাঃ) মদীনাতে বৃষ্টি ও ভয় ছাড়াও যোহর ও আসর এবং মাগরিব ও ইশার নামায একত্রিত করে আদায় করেছেন। (মুসলিম)
টিকাঃ
হাদীছে বর্ণিত বৃষ্টি ছাড়াও কথাটি প্রমাণ করে যে বৃষ্টির সময় তখন দুই নামায একত্রে আদায় করার বিষয়টি সর্বসাধারণের কাছে পরিচিত ছিল। আমার পক্ষ থেকে লাগানো টিকা এ পর্যন্তই।
ইমাম আলবানী (রঃ) বলেনঃ হাদীছে ভয় ও বৃষ্টির কথাটি এসেছে। এথেকে বুঝা যাচ্ছে যে, বৃষ্টির সময় দুই নামায একত্রে করে পড়ার বিষয়টি তাদের কাছে খুবই প্রসিদ্ধ ছিল। তিনি আরও বলেনঃ বৃষ্টির সময় দুই নামায একত্র করে পড়া জায়েয না হলে এখানে বৃষ্টির কথা উল্লেখ করা অর্থহীন। (দেখুন ইরওয়াউল গালীল, ৩/৪০)
২)
মুস্তাহাযার রোগে আক্রান্ত মহিলাদেরকে রাসূল (সাঃ) একবার গোসল করে দুই নামায একত্র করে পড়ার আদেশ দিয়েছেন।
৩)
তাবুক যুদ্ধে রাসূল যোহর-আসর এবং মাগরিব-ইশা একত্র করে আদায় করেছেন। (মুসলিম)


৩১ নং প্রশ্নের উত্তরের পরের অংশ।
সফরের সময় দুই নামায একত্র করে পড়ার হাদীছগুলো খুবই প্রসিদ্ধ।
আলেমগণ বলেনঃ কষ্টের কারণে সফর অবস্থায় দুই নামাযকে একত্র করে পড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। আর বৃষ্টি, অসুস্থতা, ভয়, প্রচন্ড ঠান্ডা ও বন্যার কারণেও প্রতি ওয়াক্তে যথা সময়ে মসজিদে গিয়ে নামায পড়া কষ্টকর। এই কষ্ট লাঘব করার জন্যও উপরোক্ত অবস্থায় দুই নামায একত্র করে পড়া জায়েয। সুতরাং এই অনুমতি গ্রহণ করাই আল্লাহর নিকট পছন্দনীয়।
৫)
ইবনে উমার (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহ যেমন তার নাফরমানী করাকে অপছন্দ করেন তেমনি তার রুখসতগুলো তথা যে সমস্ত ক্ষেত্রে তিনি অনুমতি দিয়েছেন, তা গ্রহণ করাও ভালবাসে। (মুসনাদে আহমাদ ও ইবনে খুজায়মা। ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন। দেখুন ইরওয়াউল গালীল হাদীছ নং- ৫৬৪)
৬)
ইমাম মালেক (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নাফে (রঃ) বলেনঃ খলীফা ও আমীরগণ যখন বৃষ্টির সময় মাগরিব ও ইশার নামায একত্রে আদায় করতেন, তখন ইবনে উমারও তাদের সাথে উভয় নামায একত্র করে আদায় করতেন। দেখুন ইরওয়াউল গালীল হাদীছ নং- ৫৮৩)
৭)
মুসা ইবনে উকবা (রঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ উমার বিন আব্দুল আযীয বৃষ্টি হলে মাগরিব ও ইশার নামায একত্রে আদায় করতেন। সাঈদ বিন মুসায়্যেব, উরওয়া ইবনুয যুবায়ের, আবু বকর বিন আব্দু রাহমানসহ সেই সময়ের বিজ্ঞ আলেমগণ আমীরদের সাথে তাই করতেন। তারা এর কোন প্রতিবাদ করতেন না। (দেখুনঃ ইরওয়া, ৩/৪০)
উপসংহারঃ
সুতরাং কোন ইমাম যদি দুই নামায একত্রিত করে আদায়ের ক্ষেত্রে রুখসত (জায়েয হওয়ার বিধান) গ্রহণ করে এবং বৃষ্টির সময় উপস্থিত মুসল্লীদেরকে নিয়ে দুই নামাযকে একত্রিত করে আদায় করতে চায়, তখন ইমামের বিরোধীতা করা মুসল্লীদের জন্য বৈধ নয়। আরও স�