এক দিনে ঈদ ও সিয়াম ।

"সমস্ত প্রসংশা মহান আল্লাহর জন্য সালাত (দুরুদ) ও সালাম বর্ষিত হোক মুহাম্মাদ (ﷺ) এর উপর"

এক দিনে ঈদ ও সিয়ামের পক্ষ–বিপক্ষ নিয়ে প্রতি বছরই আমাদের অনেকে ভাই-বোনদের মাঝে তুমুল ঝগড়া-বিবাধ পরিলক্ষিত হয়। এমনকি যারা কুরাআন ও সহীহ্‌ সুন্নাহ্ এর খাঁটি অনুসারি বলে দাবি করে তাদের মধ্যেও একই অবস্থা। এ যেন দিনে দিনে উক্ত বিষয় নিয়ে তর্ক-বির্তক ক্রমেই বেড়েই চলছে। কেউ কেউ একদিনের বিপক্ষে অবস্থানকারিকে বিদাতি বলে (!) আবার কেউ তো এক দিনের পক্ষের লোককে খারিজি উপাধি দিতেও দ্বিধাবোধ করছে না [ইন্না-লিল্লাহি-ওয়া-ইন্না-ইলাইহি-রাজিউন]। আসলে উভয় পক্ষেরই একে অন্যের প্রতি ঐরূপ বিদাতি, খারিজী কিছুই বলা একেবারেই ঠিক হচ্ছে না। এ যেন ঐক্য গড়তে গিয়ে ভাঙ্গোন সৃষ্টির আলামত। একে অন্যের সাথে জানা-অজানা, বুঝ-অবুঝ, মিল-অমিল বিষয়গুলো নিয়ে উত্তম পদ্ধতিতে আলোচনা করা জরুরি।

নানার ধরনের নোংরা বা ইসলাম বিরুধী কথাবার্তা দিয়ে আমাদের মুসলিম ভাই-বোনদের মাঝে আমরা কখনোই ঐক্য গড়তে বা টিকাতে পারবো না। পক্ষ–বিপক্ষের উভয়কেই কথা-বার্তা-কাজ-কর্মে নম্র ও ভদ্রতা অবল্বন করতে হবে। আল্লাহ্‌ আমাদের সকল ভাই-বোনদের হেফাযত করুক উক্ত কাজ-কর্ম থেকে। আমিন।

যারা এই লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন তারপর কমেন্ট করবেন। অহেতুক , অযাথা কমেন্ট বা লিঙ্ক প্রদানের প্রয়োজন নেই। আপনার কিছু বলা বা উপস্থাপন করার থাকলে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। আমাদের মাঝে অনৈক্য নয় ঐক্যর প্রয়োজন। এবার আসুন সিয়াম ও ঈদ নিয়ে কিছু সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাক ,

►রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করনে - -لاتصوموا حتى تروه ولاتفطروا حتى تروه
তোমরা চাঁদ না দেখে রোযা রাখবনো এবং চাঁদ না দেখে রোযা ছাড়বনো (ঈদ করবনো)। (সহীহ্ বুখারী )

► রাসূল (ﷺ) আরো ইরশাদ করেন - صوموا لرؤيته وافطروا لروؤيته
চাঁদ দেখার ভিত্তিতে তোমরা রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখার ভিত্তিতে তোমরা রোযা ছাড়, ঈদ কর।(সহীহ্‌ মুসলিম )

উক্ত হাদিস থেকে বুঝা গেল চাঁদ দেখা জরুরি সিয়াম ও ঈদ পালনের জন্য। কিন্ত সবারই কি চাঁদ দেখতেই হবে সিয়াম ও ঈদ পালনের জন্য ? তিনি নিজেও চাঁদ না দেখে সাক্ষ্যির ভিত্তিতে সিয়াম ও ঈদ পালন করতেন ও করার নির্দেশ দিতেন। এ ক্ষেত্রে রাসূল (ﷺ) যা করেছেন ,

► রাসূল (ﷺ) আরো বলেন
صوموا لرؤيته وأفطروا لرؤيته، وانسكوا لها؛ فإن غم عليكم فأكملوا ثلاثين، فإن شهد شاهدان فصوموا وأفطروا

তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ, চাঁদ দেখেই ভঙ্গ কর। চাঁদ দেখাকে অভ্যাসে পরিণত কর। যদি চাঁদ না দেখা যায়, তবে ত্রিশ দিন পূরণ কর। যদি দু’ ব্যক্তি সাক্ষ্য প্রদান করে, তবে তোমরা রোজা রাখ, এবং রোজা ভঙ্গ কর। [ নাসায়ি : ২১১৬, হাদিসটি সহি]

এই হাদিটিতে তিনটি শর্ত্য বিদ্যমান – চাঁদ দেখতে হবে, না দেখতে পেলে ৩০টি সিয়াম পূর্ণ করতে হবে অথবা যদি দু’ ব্যক্তি সাক্ষ্য প্রদান করে যে তারা চাঁদ দেখেছে তবে সিয়াম শুরু করতে হবে। এর যে কোন একটি হলেই কিন্তু সিয়াম শুরু করা যাচ্ছে ।

►যারা একদিনে সিয়াম ও ঈদের বিপক্ষে তাদের প্রধান একটি দলীল◄

কুরাইব (রহ) থেকে বর্ণিত। হারিসের কন্যা উম্মুল ফযল তাকে সিরিয়ায় মু’আবিয়া (রা)-র নিকট পাঠালেন। কুরাইব বলেন, অতঃপর আমি সিরিয়া পৌঁছে তার প্রয়োজনীয় কাজ সমাপণ করলাম। আমি সিরিয়া থাকতেই রমাযান মাস এসে গেল। আমি জুমআর রাতে রমাযানের চাঁদ দেখতে পেলাম। অতঃপর মাসের শেষ দিকে আমি মদীনায় ফিরে এলাম। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) রোযা সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে আমাদের জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কখন চাঁদ দেখছো? আমি বললাম, আমিতো জুমআর রাতেই চাঁদ দেখেছি। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, তুমি নিজেই কি তা দেখেছো? আমি বললাম, হ্যাঁ, অন্যান্য লোকেরাও দেখেছে এবং তারা রোযা রেখেছে। এমন কি মু’আবিয়া (রা)-ও রোযা রেখেছেন। তিনি বললেন, আমরা তো শনিবার রাতে চাঁদ দেখেছি, আমরা পূর্ণ ত্রিশটি রোযা রাখব অথবা এর আগে যদি চাঁদ দেখতে পাই তাহলে তখন ইফতার করবো। আমি বললাম, আপনি কি মুআবিয়া (রা)-র চাঁদ দেখা ও রোযা রাখাকে (রোযার মাস শুরু হওয়ার জন্য) যথেষ্ট মনে করেন না? তিনি বললেন, না, * রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের এভাবেই (চাঁদ দেখে রোযা রাখা ও ইফতার করার জন্য) নির্দেশ দিয়েছেন। * (সহিহ মুসলিম হা/২৩৯৬ , ইসলামিক সেন্টার)

এই হাদিটি ধারা এমন বুঝার কোন উপায় নেই যে উক্ত সাহাবী রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর বিপক্ষে আমল করেছেন। কারন তারা এমন চাঁদটির সংবাদ পেয়েছেন যখন রামাযান শেষও হয়ে যায়নি আবার একেবারে শুরু হচ্ছে এমনটিও নয়। তখন তারা চাইলেও রামাযান ছেড়ে দিতে বা নতুন করে শুরু করতে পারতো না। কারন রমাযান শুরু ও শেষের দিক থেকেই শুধু মাত্র কম বেশি হয়ে থাকে। যেমন তারা চাঁদ দেখার সংবাদ দেরিতে পেয়েছে তাই হয়তো দেরিতে শুরু করেছে কিন্তু তাদের কাছে কিন্তু পূর্বে কোন সংবাদ পৌছেনি তাই তারা সিয়াম শুরু করতে পারেনি। তাই তারা ৩০টি সিয়াম পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত ঠিকই ছিল। এক্ষেত্রে যেমনটি রাসূল (ﷺ) এর নির্দেশ ছিল ,

صوموا لرؤيته وأفطروا لرؤيته، وانسكوا لها؛ فإن غم عليكم فأكملوا ثلاثين، فإن شهد شاهدان فصوموا وأفطروا
তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ, চাঁদ দেখেই ভঙ্গ কর। চাঁদ দেখাকে অভ্যাসে পরিণত কর। যদি চাঁদ না দেখা যায়, তবে ত্রিশ দিন পূরণ কর। যদি দু’ ব্যক্তি সাক্ষ্য প্রদান করে, তবে তোমরা রোজা রাখ, এবং রোজা ভঙ্গ কর। [ নাসায়ি : ২১১৬, হাদিসটি সহীহ্‌]

তাই উক্ত হাদিসটি কোন মতবেদর সৃষ্টি করার কথা নয়। বরং সমাধানে পথ হওয়ারই কথা ছিল। আরেকটি বিষয় সেটি হচ্ছে সাহাবীদের আমলে ভূল হতে পারে কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর আমলে কোন ভূল হওয়ার কথা নয়। যদি উপরোক্ত হাদিসটি একদিন পরে সিয়াম ও ঈদ পালনের দলিল হয় তবে আমাদের সংশোয় নিরসনে রাসূল (ﷺ) এর আমলে দিকে লক্ষ্য করা উচিত তিনি কি করেছিলেন ঐরুপ বার্তা পাওয়ার পর।

►অথচ দেখুন চাঁদ দেখার সংবাদ পাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর আমল কি ছিল-

হযরত আবু উমাইর ইবনু আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে রাসূল (ﷺ) -এর নিকট একদল আরোহী আসল এবং তারা সাক্ষ্য দিল যে তারা গতকাল (শাওয়ালের) চাঁদ দেখেছে। ফলে রাসূল (ﷺ) মানুষকে রোযা ছাড়ার আদেশ দিলেন। পরের দিন প্রাতঃকালে সকলেই ঈদগাহে সমবেত হলেন।[আবু দাউদ, নাসায়ী,মিশকাত-১২৭১]

এখানে দেখা যাচ্ছে তিনি সংবাদ পাওয়ার পর পর সিয়াম ছেড়ে দিয়েছেন। আর ঈদ এর দিন সিয়াম পালন করা হারাম। কুরাআন ও সুন্নাহ্‌ বিরুধী। তাই আমাদের উচিত সন্ধেহমুক্ত আমল করা। আর মতবিরোধ নিরুপনে আল্লাহ ও তারা রাসূল (ﷺ) দিকে ফিরে যাওয়া।

মহান আল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ فَإِن تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللّهِ وَالرَّسُولِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلاً

হে ঈমাদারগণ আল্লাহর নির্দেশ ! মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূল্যের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম। [সূরাঃ আন-নিসা ৪/৫৯]

► অনেক ভাইয়ের অনেক ধরনের প্রশ্ন ও এর উত্তর ◄

✱ কেউ বলে খলিফা/রাস্ট্রের প্রধান যদি বলে তবে আমিও একদিনে ঈদ করবো।
- ভাই এই রুপ ক্ষেত্রে যে/যারা ঐ কথাটি বলছেন এর কোন স্পষ্ট সহীহ্‌ দলিল নেই বলেই জানি।

✱ কেউ বলছে একই দিনে সাড়া পৃথিবীতে কিভাবে ঈদ সম্ভব ?

- আসলে বিষয়টি একই দিনে বা একই সাথে অর্থাৎ ২৪ ঘন্টার মধ্যে। যেমন যারা যার অবস্থানে থেকে সে তার তার দেশের স্থান কাল সময়ের উপর ভিত্তি করে সিয়াম ও ঈদ উদযাপন করবে। কাজটি উদযাপন করা হবে পৃথিবী ব্যাপি একই দিনে-রাতে অর্থাৎ চক্রকারে।

✱ বাংলাদেশ বা যারা একদিন পর সিয়াম পালন শুরু করে তাদের প্রধান ভূলটি কোথায় ???
- আসলে এর প্রধান ভূল হচ্ছে মাস বা দিন গণণায়। কারন আরবি মাস শুরু হয় সূর্য ডুবার সাথে সাথে। অথচ উক্ত দেশ গুলো কয়েক ঘণ্টা পার্থক্যের কারনে তা গণণা করছে পাক্কা ২৪ ঘন্টা / ১ দিন পর। যা চরম ভূল।আর এখান থেকেই ভ্রিভান্তির সৃষ্টি।

►► উল্লেখ্য যে আমি পূর্বে সিয়াম পালন করতাম নিজ নিজ দেশ ও অঞ্চল অনুযায়ি। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ এ নিয়ে মতবেদ দেখে আসছিলা। তাই আমি নিজের সংশোয় ও সন্ধেহ্‌ দূর করার জন্য অনেক দিন যাবৎ উভয় পক্ষের লেখা বই গুলো পড়ে দেখলাম। এবং আমি দেখতে পেলাম যারা একদিনে বিপক্ষে অবস্থান করছেন তাদের কুরাআন ও সুন্নাহ্‌র দলিল উপস্থাপন থেকে যুক্তি, বিভিন্ন ব্যক্তি ফতোয়া ইত্যাদি বেশি উপস্থাপন করেছেন। অথচ যারা একদিনের পক্ষে অবস্থান করছেন তাদের দলীল উপস্থাপনের পরিমানটাই বেশি। তাই ফতোয়া, মাসায়েল,ইস্তেহাদ, ব্যক্তির চিন্তা-ভাবনা গবেষনা তখন আর টিকে না যখন স্পষ্ট কুরাআন ও সহীহ্‌ সুন্নাহ্‌ দলিল পাওয়া যায়।

তাই ইন-শা-আল্লাহ্‌ আমি সিন্ধান্ত নিয়েছি এখন থেকে আমি একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করবো।আর পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই এই সাথে চক্রাকারে সিয়াম ও ঈদ পালন করে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উক্তি—
الصوم يوم تصومون، والفطر يوم تفطرون، والأضحى يوم تضحون.
যেদিন তোমরা সকলে রোজা পালন করবে, সেদিন রোজা ; যেদিন সকলে ঈদুল ফিতর পালন করবে, সেদিন ঈদুল ফিতর। আর যেদিন সকলে কোরবানি পালন করবে, সেদিন ঈদুল আযহা। [তিরমিজি : ৬৯৭, হাদিসটি সহি]

তাই আপনারদের প্রতি অনুরোধ থাকলো ঝগড়া নয় এক অন্যকে বুঝাতে পারেন এবং পক্ষে বিপক্ষের দলীল গুলো নিয়ে উভয়ই Study করুন। তারপর সিধান্ত নিন। আর আমার এই পোষ্টে কোন ভূল-ত্রুটি হয়ে থাকলে ইন-শা-আল্লাহ্‌ পড়ে সংশোধন করে দিব। আর আপনাদের কাছেও যদি আমার সিধান্তের বিপরীত কোন স্পষ্ট দলিল থাকে তবে অবশ্যই উপস্থাপন করুন। যেন আমার অজানা বিষয়টি আমি জানতে পারি। আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে চলার তৈফিক দান করুন। আমিন।

আসা করি যাদেরকে এই পোষ্টটি Tag করা হয়েছে তাদের কাছে এ বিষয়ে পক্ষে বা বিপক্ষে স্পষ্ট কুরাআন ও সহীহ্‌ সুন্নাহ্‌র আলোকে দলিল থাকলে অবশ্যই আমাকে জানিয়ে সহায়তা করবেন। যেন আমার যে কোন সিধান্ত গ্রহনে তা আরো সাহায়তা কাজে লাগে।

[আল্লাহই অধিকা জানেন – Allah Know Best ] 


Monir Hossain

বিশ্বব্যাপী একই দিনে সিয়াম (রোজা) ও ঈদ পালন ও শারীয়াহর মূলনীতির আলোকে কুরাইব রহ. এর হাদিস



বিসমিল্লাহ, মহান আল্লাহ বলেছেন,
তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথেমিশ্রিত করো না এবং জেনে-বুঝে সত্য গোপন করো না।"- (সূরাঃ আল-বাকারাহ্, আয়াতঃ৪২)

এ আয়াতটি পেশ করার উদ্দেশ্য হলো যে বর্তমানে অনেক মানুষকে দেখা যায় যারা জেনে বুঝে সত্যকে অস্বীকার করে-
  • নিজের অন্তরের অনুসরণ করে
  • তর্কে জিতার জন্য
  • সত্য মেনে নিলে মানসম্মান কমে যাবে এই ভয়ে
  • লোকে খারাপ বলতে পারে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এবার মূল কথায় আসি। আমার এই পোষ্টটা হচ্ছে একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করা না করা বিষয়ে কুরাইব রহ. এর হাদিস প্রসঙ্গে।


শারীয়াহর একটি মূলনীতি হচ্ছে - 
  • আপনি এক আয়াতের এমন কোন ব্যাখ্যা নিতে পারবেন না, যে ব্যাখ্যাটি অন্য আয়াতের বিরুদ্ধে যায়। 
  • একই ভাবে আপনি এক হাদিসের এমন কোন ব্যাখ্যা নিতে পারবেন না, যেটি অন্য হাদিসের বিরুদ্ধে যায়। 
  • সেই ব্যাখ্যাটিই গ্রহণ করতে হবে যেটা গ্রহণ করলে দুটো গ্রহণযোগ্য হাদিসের মধ্যেই সমন্বয় সাধিত হয়।

এবার সেই বিখ্যাত কুরাইব রহ. এর হাদিসটি নিয়ে আলোচনা করছি। 
কুরাইব (রহ.) হতে বর্ণিত, মুয়াবিয়া (রা.) এর উদ্দেশ্য উম্মুল ফাযল বিনতুল হারিস (রা.) তাকে শামে (সিরিয়া) প্রেরণ করেন। কুরাইব (রহ.) বলেন সিরিয়ায় পৌঁছানোর পর আমি উম্মুল ফাযল (রা.) এর কাজটি শেষ করলাম। আমি সিরিয়ায় থাকাবস্থায় রমজান মাসের চাঁদ দেখতে পাওয়া গেল। আমরা জুমুয়ার রাতে (বৃহস্পতিবার রাত) চাঁদ দেখতে পেলাম। রমজানের শেষের দিকে মাদীনায় ফিরে আসলাম। ইবনে আব্বাস (রা.) আমাকে (কুশলাদি) জিজ্ঞেস করার পর চাঁদ দেখার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বললেন কোনদিন তোমরা চাঁদ দেখতে পেয়েছিলে? আমি বললাম জুমুয়ার রাতে (বৃহস্পতিবার রাত) চাঁদ দেখতে পেয়েছি। তিনি বললেন (ইবনে আব্বাস (রা.) জুমুয়ার রাতে (বৃহস্পতিবার রাত) তুমি কি স্বয়ং চাঁদ দেখতে পেয়েছ? আমি বললাম লোকেরা দেখতে পেয়েছে এবং তারা স্বওম (রোজা) পালন করছে এবং মুয়াবিয়া (রা.)ও স্বওম (রোজা) পালন করছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, আমরা কিন্তু শনিবার রাতে (শুক্রবার রাতে) চাঁদ দেখেছি। অতএব, ত্রিশ দিন পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অথবা চাঁদ না দেখা পর্যন্ত আমরা স্বওম পালন করতে থাকবো। আমি বললাম (কুরাইব (রহ.) মুয়াবিয়া (রা.) এর স্বওম (রোজা) পালন করা এবং চাঁদ দেখা আপনার জন্য কি যথেষ্ট নয়। তিনি ***(ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, না, রসূলুল্লাহ্ (দ.) আমাদেরকে এরূপ করতে নির্দেশ দিয়েছেন***।” 

সূত্র: মুসলিম, অধ্যায় ঃ ১৩, কিতাবুস্ স্বিয়াম, হাদিস ২৮/১০৮৭, নাসাঈ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ২২, স্বিয়াম, হাদিস # ২১১১, আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বিয়াম, হাদিস # ২৩৩২,তিরিমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৬, কিতাবুস্ স্বওম, হাদিস # ৬৯৩, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ স্বিয়াম, হাদিস # ৮২০৫ (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।


এই হাদিস থেকে অনেক ভাই বুঝ নেন যে,
১. এক অঞ্চলের চাঁদ অন্য অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য নয়
২. যারা একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করে, তারা হারাম কাজ করে। 
৩. সিরিয়ার চাঁদ মাদিনার জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
৪. নিজ নিজ অঞ্চলের চাঁদ দেখেই সিয়াম ও ঈদ পালন করতে হবে

যদি কেউ এমন বুঝ গ্রহণ করে থাকেন তবে উনি ভুল বুঝেছেন। কারণ স্বয়ং রসূলুল্লাহ সা: নিজেই ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করেছেন। সুতরাং আপনি উপরোক্ত হাদিসের এমন ব্যাখ্যাই গ্রহণ করেছেন যে, ব্যাখ্যাটি অন্য একটি সহীহ হাদিসের বিরুদ্ধে চলে গেছে, এমনকি রসূলুল্লাহ সা: এরও আমলের বিপরীত। নিচের হাদিসটি লক্ষ্য করুন:-


আনাস ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, “তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (দ.) এর সাহাবী আমার কতিপয় আনসার পিতৃব্য আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, একবার শাওয়ালের নতুন চাঁদ আমাদের উপর গোপন থাকে। আমরা (পরের দিন অর্থাৎ ঈদের দিন) স্বওম (রোজা) পালন করি। এমতাবস্থায়, ঐ দিনের শেষভাগে একটি কাফেলা নাবী (দ.) এর কাছে এসে বিগতকাল চাঁদ দেখার স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। তখন রসলুল্লাহ্ (দ.) আমাদের স্বওম (রোজা) ভাঙ্গতে নির্দেশ দিলেন এবং তারপরের দিন ঈদের (স্বলাতের) জন্য বের হতে বললেন।” –

আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, দুই ব্যাক্তি শাওয়াল (মাসের) নতুন চাঁদের স্বাক্ষ্য দিলে, হাদিস # ২৯৩৯, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৭, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ, ঃ ৫, দুইজন নতুন চাঁদ দেখার স্ব্যা দিলে, হাদিস # ১৬৫৩, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), হাসান, অধ্যায় ঃ কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, যে দুইজন নিষ্ঠাবান থেকে নতুন চাঁদের স্বা্েযর ভিত্তিতে ঈদুল ফিতর করে, হাদিস # ৮১৮৮, ৮১৮৯, ৮১৯০, অনুচ্ছেদ ঃ ৬৩, হাদিস # ৮১৯৬, ৮১৯৮, ৮১৯৯ (হাদিসটি ইবনু মাজাহ্’র বর্ণনা)।

সুতরাং যারা বলে এক অঞ্চলের কুরাইব রহ. এর হাদিসটি দিয়ে বুঝাতে চায় এক অঞ্চলের চাঁদ অন্য অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য নয়, তাদের ব্যাখ্যাটি উপরের হাদিসটির বিপরীতে গিয়েছি এবং রসূলুল্লাহ সা: এর আমলেরও বিপরীতে গিয়েছে। সুতরাং “এক অঞ্চলের চাঁদ অন্য অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য নয়”ব্যাখ্যাটি ভুল, ভুল, ভুল। 


একই ভাবে যারা বলে, “ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর নিয়ে যারা সিয়াম ও ঈদ পালন করে, তারা হারাম কাজ করে” তারা মূলত: এ কথাই বুঝাতে চায় যে, স্বয়ং রসূলুল্লাহ সা: ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করে হারাম কাজ করেছেন। (নাউজুবিল্লাহ)।

একই ভাবে যারা বলে সিরিয়ার চাঁদ মাদিনার জন্য প্রযোজ্য নয়, তাদের কথাও ভুল। কারণ বর্তমানে সিরিয়া ও মাদিনায় একই সাথে সিয়াম ও ঈদ পালন করে। যারা বলে সিরিয়া ও মাদিনা ভিন্ন অঞ্চল হওয়ায় একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করা হারাম,
****তাদের নিকট প্রশ্ন, বর্তমানে যে, সিরিয়া ও মাদিনা একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করছে, তারা কি হারাম কাজ করছে?
****


সুতরাং  আমি আবারও পয়েন্টগুলো স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, যারা কুরাইব রহ. এর হাদিসটি একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালনের বিপক্ষে দালিল হিসেবে পেশ করেন, তারা:-

১. কুরাইব রহ. এর হাদিসটির এমন ব্যাখ্যাই গ্রহণ করেছে যেটি অন্য হাদিসের বিরুদ্ধে গেছে ;

২. তারা হাদিসটির এমন ব্যাখ্যাই করেছে, যেই ব্যাখ্যা অনুযায়ী রসূলুল্লাহ সা: ও ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করে ভুল করেছেন বলে প্রতীয়মান হয় (নাউজুবিল্লাহ)


৩. তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী সিরিয়া ও মাদিনায় একই দিনে ঈদ পালন করা হারাম। অথচ তাদের কথা মেনে নিলে বলতে হয়, বর্তমানে যারা সিরিয়া ও মাদিনা একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করে তারা হারাম
কাজ করছে। 



পক্ষান্তরে আমরা যে ব্যাক্ষ্যাটি গ্রহণ করেছি সেটি সকল হাদিসের মধ্যে সমন্বয় হয়েছে।

===============================================================================================

হাদিসটির আরো একটি অংশ নিয়ে আলোচনা না করলেই নয়।
প্রথমত: নতুন চাঁদ দেখার শর্ত হচ্ছে দুজন মুসলিম স্বাক্ষ্য দিবে। কিন্তু কুরাইব রহ. হচ্ছেন একজন ব্যক্তি। এজন্যই ইবনে আব্বাস রা. স্ব্যাটি গ্রহণ করেননি। 

দ্বিতীয়ত: কুরাইব রহ. এর হাদিসটির শেষের অংশ হচ্ছে, “ ইবনে আব্বাস রা: বলেছেন, রসূল আমাদের এরূপ নির্দেশই দিয়েছেন”। কিন্তু নির্দেশ কি ছিল সেটা হাদিস থেকে স্পষ্ট নয়। আমরা জানি এক হাদিস অন্য হাদিসের ব্যাখ্যায় সাপোর্ট হিসেবে আসে। রাসূলুল্লাহ সা: এর নির্দেশ কি ছিল সেটা আমরা বের করেছি।

হুসাইন ইবনুল হারিস আল-জাদালী (রহ.) সূত্রে বর্ণিত, “একদা মাক্কাহ্’র আমীর ভাষণ প্রদানের সময় বলেন যে, রসূলুল্লাহ্ (দ.) আমাদেরকে চাঁদ দেখে হাজ্বের সময় নির্ধারণ করতে বলেছেন। যদি চাঁদ না দেখি তাহলে নিষ্ঠাবান দু’জন ব্যক্তির (চাঁদ দেখার) স্বা্েযর ভিত্তিতে যেন আমরা হাজ্ব পালন করি।....... এরপরআব্দুল্লাহ্ ইবনু ওমার (রা.) বলেন, ****রসূলুল্লাহ্ (দ.) আমাদেরকে উক্ত নির্দেশ দিয়েছেন****। 

সূত্র: আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, দুই ব্যাক্তি শাওয়াল (মাসের) নতুন চাঁদের স্ব্যা দেয়া, হাদিস # ২৩৩৮, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), হাসান, অধ্যায় ঃ কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, যে দুইজন নিষ্ঠাবান থেকে নতুন চাঁদের স্বা্েযর ভিত্তিতে ঈদুল ফিতর করে, হাদিস # ৮১৮৫ (হাদিসটি আবু দাউদের বর্ণনা)।

সুতরাং উপরোক্ত হাদিসটি থেকে স্পষ্ট হয়, ইবনে আব্বাস রা: দুজন স্বাক্ষী না থাকাতে এবং কুরাইব রহ. একজন হওয়ার কারণেই চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করেননি। আর ইবনে আব্বাস রা. রাসূলুল্লাহ সা: আমাদের এরূপ নির্দেশ দিয়েছেন বলতে, দুজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যের কথাই বলেছেন যার প্রমাণ ইবনে ওমর রা. এর হাদিস। 

আবারও বলছি উপরোক্ত হাদিসটি থেকে স্পষ্ট হয়, ইবনে আব্বাস রা: দুজন স্বাক্ষী না থাকাতে এবং কুরাইব রহ. একজন হওয়ার কারণেই চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করেননি। আর ইবনে আব্বাস রা. রাসূলুল্লাহ সা: আমাদের এরূপ নির্দেশ দিয়েছেন বলতে, দুজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যের কথাই বলেছেন যার প্রমাণ ইবনে ওমর রা. এর হাদিস। 

সুতরাং হাদিসটি কোনোভাবেই ভিন্ন ভিন্ন দিনে সিয়াম ও ঈদ পালনের পক্ষে দালিল হিসেবে আসতে পারে না। দালিল হিসেবে আসলে আজ সিরিয়া ও মাদিনা ভিন্ন ভিন্ন দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করত না। যারা এমন ভুল বুঝ নিয়ে বসে আছেন, আল্লাহর নিকট তাদের জন্য দুআ করি যেন আল্লাহ তাদের সঠিক বুঝ দান করেন।

===============================================================================================

যদি বলেন, মুহাম্মাদ সা: এর নিকট যে কাফিলাটি এসেছিল, সেটি এসেছিল মাদিনার খুবই নিকট থেকে। এজন্যই রসূল সা: গ্রহণ করেছেন। তাহলে আমাদের প্রশ্ন:- 
  • কাছ থেকে আসলে চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করা যাবে আর দূর থেকে আসলে গ্রহণ করা যাবে না, এর দালিল কি?
  • দূরত্বের পরিমাণ কত কিলোমিটার হবে?
  • কাফিলাটি কাছ থেকে আসলে সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার দূর থেকে আসার কথা ধরা যায়। তার মানে বুঝা যায়, আপনার কথা অনুযায়ী ৫০ কিলোমিটার থেকে চাঁদ দেখার খবর আসলে গ্রহণ করা যাবে। কিন্তু ৫০ কিলোমিটারের বেশী দূর থেকে আসলে গ্রহণ করা যাবে না। তাহলে এবার বলুন, কুষ্টিয়ার চাঁদ দেখার খবর কেন ঢাকাতে গ্রহণ করেন যেখানে দূরত্বের পরিমাণ হচ্ছে ২৬২ কিলোমিটার? কি উত্তর দিবেন এ প্রশ্নের?

অনেকে বলে থাকেন, রসূলুল্লাহ সা: সিয়াম ভেঙ্গে এবং সাহাবীদের ভাঙ্গার নির্দেশ দিয়ে, কেন পরের দিন ঈদগাহে ডাকলেন? এর উত্তর হচ্ছে ঈদের সলাত পড়া হয় সকালের দিকে। সেদিন সন্ধার কিছু আগে খবর পাওয়ায় যেহেতু ঈদের সলাত আদায় করা সম্ভব ছিল না, তাই তিনি পরদিন ঈদগাহে আসতে বলেছেন। আর পরদিন ঈদগাহে আসতে বলা দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন দিনে সিয়াম পালন করার প্রমাণ হয় না। 

===============================================================================================

সুতরাং এর পরেও যারা সত্যকে অস্বীকার করবে, নিজের অন্তরের অনুসরণ করতে গিয়ে হাদিসের এমন ব্যাখ্যা গ্রহণ করবে যেটি অন্য হাদিসকে বাতিল করে, যারা নিজেদের আলিমদের অন্ধ অনুসরণ করে ”আমার আলিম বেশী বুঝে” টাইপের গোঁড়ামী নিয়ে বসে আছে, তাদের বিচারের ভার আল্লাহর উপর ন্যাস্ত করছি।

وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءتْ مَصِيرًاযে কেউ রসূলের বিরুদ্ধাচারণ করে, তার কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সব মুসলমানের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান। (সূরা নিসা-৪/১১৫)  


আল্লাহ আমাদের সত্য মেনে নেওয়ার ও সঠিত পথের উপর রাখুন, এই দুআ করেই আমার পোষ্টটি শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য এই বইটা সংগ্রহে রাখুন। এই বিষয়ের উপর হাফেজ হয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
ডাউনলোড লিংক: