✘✘ প্রিয় মাহবুব (ছঃ) কর্তৃক হজরত জামী (রঃ) কে মদীনায় যাইতে নিধেষ করার কেচ্ছা ✘✘

✘✘ প্রিয় মাহবুব (ছঃ) কর্তৃক হজরত জামী (রঃ) কে মদীনায় যাইতে নিধেষ করার কেচ্ছা ✘✘

হযরত জামী (রহঃ) এই কাছীদা লেখার পর একবার হজ্জে রওয়ানা হইয়া গিয়াছিলেন। তাঁহার ইচ্ছা ছিল মদীনায়ে মোনাওয়ারা পৌঁছিয়া হুজুরে পাক (ছঃ)-এর দরবারে এই কাছিদা পাঠ করিবে। হজ্জ আদায় করার পর তিনি যখন মদীনা শরীফ জিয়ারতের এরাদা করিলেন। তখন মক্কা শরীফের আমীর হুজুরে আকরাম (ছঃ) এর জিয়ারত লাভ করিলেন।........... ইহার পর আমীর তাহাকে জেল হইতে বাহির করিয়া বহুত ইজ্জত ও সম্মান প্রদর্শন করিলেন। (ফাজায়েলে দরূদ শরীফ ১৩৭-১৩৮ পৃষ্ঠা সংশোধিত সংস্করণ ১৭ই জানুয়ারী ১৯৯২ ইং, তাবলীগী কুতুব খানা, চকবাজার ঢাকা-১২১১)

পাঠকবৃন্দ ও তাবলীগী ভাইয়েরা! ফাযায়েলে দরূদ এর উল্লিখিত ঘটনাকে আবারও পড়ে দেখুন এবং খুজে দেখুন এর কোন সনদ আছে কিনা। অথবা কোন গ্রহণযোগ্য কিতাবের উদ্ধৃতি আছে কিনা। দেখবেন উল্লিখিত ঘটনার কোন সনদ ও হাওয়ালা পাবেন না। তবে হ্যাঁ এটা অবশ্যই পাবেন।

শাইখ জাকারিয়া সাহেব লেখেন :
“এই কেচ্ছা,আমার শোনা এবং স্মরণ থাকার মধ্যে কোন সন্দেহ নাই। তবে বর্তমানে আমরা দৃষ্টি শক্তির দুর্বলতা আর অসুস্থাতার জন্য কোন কিতাব দেখিয়া হাওয়ালা দিবার সামর্থ নাই? হ্যাঁ পাঠকদের মধ্যে যদি কেহ কোন কিতাবে এই ঘটনা পাইয়া থাকেন তবে আমার জীবিতাবস্থায় আমাকে নিশ্চয় জানাইবেন আমার মৃত্যুর পর হইলে কিতাবের টিকায় লিখিয়া দিবেন। এই কিচ্ছার কারণেই এই অধমের খেয়াল সেই কাছীদার দিকে যাইতেছে। এই ঘটনা কিছুটা অসম্ভবও নয়।”(ফাজায়েলে দরূদ ১৩৮ পৃঃ প্রাগুক্ত)

এমনিভাবে শায়খ জাকারীয়া সাহেব ফাজায়েলে দরূদ ১৩৭ পৃষ্ঠায় লেখেন :
“এই অধমের বয়স যখন দশ এগার বৎসর তখন গঙ্গুহ নামক গ্রামে আমার পিতার নিকট ঐ কিতাব খানি পাড়িয়াছিলাম, তখন আব্বাজান হজরত জামী সম্পর্কে মুখে মুখে আমাকে কেচ্ছা শুনাইয়াছিলেন।”(প্রাগুক্ত ১৩৭)

উল্লিখিত উভয় বর্ণনা ভঙ্গি দ্বারা স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে তাবলীগী সিনাবের লেখক শাইখ সাহেব এই কিচ্ছাটিকে কোন কিতাবে পড়েন নাই স্বিয় পিতার নিকট থেকে যবানী শ্রবণ করেছন। আর এটাও জানা গেল যে, শাইখ লেখক, সৃষ্টি শক্তির দুর্বলতার কারণে কিতাবের মধ্যে এই কিচ্ছাকে তালাশও করতে পারেননি। আর আজ পর্যন্ত তাবলীগী জামা‘আতের কোন আলেমে দ্বীনেরও এই কিচ্ছাকে কোন কিতাবে মিলেনি। যদি মিলত তাহলে শাইখ জাকারিয়া অর্থাৎ লেখকের ওসীয়াত মুতাবেক তাকে হাওয়ালা হিসাবে পেশ করা হত। যখন এই কিতাবের অসংখ্য সংস্করণ বাজারে এসেছে এবং মুদ্রিত হয়েছে। এমনকি আমরা যে মুদ্রণের উদ্ধৃতি দিচ্ছি তাও সংশোধিক সংস্করণ, অথচ কোন সংস্করণে এর কোন হাওয়ালা দেয়া হয়নি। প্রমাণিত হল এ কিচ্ছার কোন সনদ সূত্র নেই। এটা মুখে মুখে শোনা সুনাবানের পুঁথির তুল্য ছাড়া আর কিছুই নয়।

তাছাড়া এই কিচ্ছা গলদ এবং ভ্রষ্ট হওয়ার সব থেকে বড় কারণ হল। এর দ্বারা আক্বীদায়ে তাওহীদ এবং শরিয়াতের মৌলিক শিক্ষার বিরোধী শিক্ষা পাওয়া যায়।

লক্ষ্য করুন :
১. জনাব জামী যে ‘কাছীদা বা নায়াত বলেছিলন, তার জ্ঞান নাবী (সাঃ) মৃত্যুর পর কবরে কেমনে হল? আর নাবী (সাঃ) মৃত্যুর পর করবে থেকে কি করে জানলেন জনাব জামী মদিনা তৈয়েবার আসিতেছে আর তার কবরের নিকট দাঁড়িয়ে কাসীদা পড়বে? এই কিচ্ছা দ্বারা কি নাবী (সাঃ) মৃত্যুর পরেও গায়েব জানেন তাই প্রমাণিত হয় না? অথচ তিনি জীবিতাবস্থায়ও গায়েব জানতেন না।

মহান আল্লাহ বলেন :
{قُل لاَّ يَعْلَمُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَ<رْضِ الْغَيْبَ إِلاَّ اللهُ}
“(হে রসূল (সাঃ) আপনি বলুন) আল্লাহ ব্যতীত আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে কেহই অদৃশ্য (গায়েব) বিষয়ের, জ্ঞান রাখে না। (সূরাঃ নামল ২৭:৬৭)

আরো দেখুন : সূরাঃ আল-আনআম ৪৯-৫০, আল বাক্বারাহ- ২৫৫, মুদ্দাসসির- ৩১।

{لَوْ كُنتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لاَسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ}
“আমি যদি গায়েব জানতাম, তাহলে কল্যাণ সঞ্চয় করে নিতাম এবং অমঙ্গল আমাকে স্পর্শ করত না।”

এর অর্থ হচ্ছে, যেহেতু আমি গায়েব জানি না, সেহেতু অধিক কল্যাণ সঞ্চয় করতে পারিনি, ফলে অমঙ্গল আমাকে স্পর্শ করেছে।
নাবী (সাঃ)’র জীবদ্দশায় মা আয়িশাহ ’র উপর মিথ্যা তহমত আরোপ করা হয়ে ছিল। এ কারণে মুহাম্মাদ (সাঃ) দীর্ঘ ৩০ দিন যাবৎ চিন্তিত অবস্থায় কালাতিপাত করেন। আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদে মা আয়িশাহ পবিত্রতার সপক্ষে আয়াত নাযিল করেন, তখন বিষটি পরিষ্কার হয় এবং নাবী (সাঃ) নিশ্চিন্ত হন (সহীহ বুখারী)। বলুন, একাধারে এক মাস পর্যন্ত মদিনায় এ বিষয়কে কেন্দ্র করে বিভিষিকাময় অবস্থা হয়েছিল, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা ওয়াহীর মাধ্যমে জানিয়ে না দিয়েছেন ততক্ষণ তিনি তার যথার্থতা জানতে সক্ষম হননি। অথচ তাবলীগী নিসাবের ঘটনা দ্বারা বুঝা যাচ্ছে মৃত্যুর পরেও নাবী (সাঃ) উপলব্ধি করেছেন বা জানছেন যে, জামী কাছীদা পাঠ করার জন্য মাদীনার অভিমুখে রওয়ানা হয়ে আসছে। (আসতাগ ফিরুল্লাহ)
— with Abrahametry Mii and 57 others.