আর টিভির ভন্ডদের ভন্ডামী ও শয়তানের ভাই !

উম্মতে মুহাম্মাদীর সাথে ও কি শয়তান এই ধোকাবাজীর খেলা খেলছে কিছু নামধারী ইমামের সাথে মিলে?

উঃ = শয়তান উম্মতে মুহাম্মাদীর অপর পরিপূর্ণভাবে জয়লাভ করেছ। সে অত্যন্ত বিপদজনক ভঙ্গিমায় মিথ্যা কথাকে রাসূলের সাঃ হাদীস বলে চালানির প্রচেষ্টা করছে। ইমাম মুসলিম রহঃ বলেন: আমি সালেহীন (সৎ-ব্যক্তি) আর রূপধারী ব্যক্তিদের মধ্যে যে মিথ্যাবাদী পেয়েছি তা অন্য কাউকে পাইনি ।এরা মিথ্যা বলার ইচ্ছা না করলেও তাদের মুখ থেকে এমনি মিথ্যা বেড়িয়ে আসে। (মুকাদ্দমাহ সহীহ মুসলিম ) (সালেহী বলতে তত্কালীন সুফীগণ)

এখান থেকে বুঝা গেল যে শয়তান ঐ সকল মানুষ দ্বারা শয়তানি কাজ করানোর প্রচেষ্টা চালিয়েছে , শয়তানের এই কাজ আজও বিদ্যমান । অনেক শিরকি চিন্তাধারা ইসলামী চিন্তাধারা হিসাবে চালাচ্ছে ঐ সকল মানুষের সাথে জরিয়ে রয়েছে পাক, ভারত, বাংলাদেশের, কিছু ভন্ড আলেম যারা শিরকী চিন্তাধায় প্রচলিত ।

তাদের আজকের আলোচনা ।

১/রাসুল (সাঃ) না বানালে আদম (আঃ)কেও বানাতেন না !

২/যদি ঈসা আঃ কে ফু দিয়ে বানাতে পারেন তবে মুহাম্মদ (সাঃ)কে কেন নূর দিয়ে বানাতে পারবেন না । (মানে মুহাম্মদ (সাঃ)নূরের তৈরী )।

৩/নবী রাসূল ওয়ালি আওউলিয়ারা গায়েব জানত!

আসেন দেখি আল্লাহর কিতাব কী বলে :

আল্লাহ বলেন: لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
(হে নবী )যদি তুমি শির্‌কে লিপ্ত হও তাহলে তোমার আমল ব্যর্থ হয়ে যাবে এবং তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে৷ (যুমার ৬৫)

১/রাসুল (সাঃ) না বানালে অদম (আঃ)কেও বানাতেন না !
উঃ = উল্লিখিত কথাটি ঠিক না,কথাগুলি সম্পূর্ন ভিত্তিহীন , বানোয়াট ও মিথ্যা । কারণ কুর'অন ও ছহীহ হাদীছ থেকে এর স্বপক্ষে কোন দলীল নেই । অপরদিকে কুর'অন মাজীদের সূরা আয -যারিয়াতে ৫৬ নং আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেছেন যে ,আমি জ্বিন জাতি এবং মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য ।

২/যদি ঈসা আঃ কে ফু দিয়ে বানাতে পারেন তবে মুহাম্মদ (সাঃ)কে কেন নুর দিয়ে বানাতে পারবেন না । (মানে মুহাম্মদ (সাঃ)নূরের তৈরী )।
উঃ = আল্লাহ বলেন : قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَىٰ إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ ۖ فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا
হে মুহাম্মাদ! বলো, আমি তো একজন মানুষ তোমাদেরই মতো, আমার প্রতি অহী করা হয় এ মর্মে যে, এক আল্লাহ তোমাদের ইলাহ, কাজেই যে তার রবের সাক্ষাতের প্রত্যাশী তার সৎকাজ করা উচিত এবং বন্দেগীর ক্ষেত্রে নিজের রবের সাথে
কাউকে শরীক করা উচিত নয়৷

কিন্তু এইসব ভন্ডরা বলে : قد جاءكم من الله نور و كتب مبين
অর্থ :নিশ্চয় তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে আলো এবং প্রকাশ্য গ্রন্থ এসেছে ।(মায়েদাহ ১৫ ) এই আয়াতে নূর বলতে কি রাসূল (সাঃ)কে বুঝানো হয়নি?
উত্তর : আল্লাহ তা'আলা তাওরাতকে "নূর" বলে অবহিত করেছেন (মায়েদা ৪৪)ইঞ্জিলকে "নূর"বলেছেন (মায়েদা ৪৬)। পবিত্র কুর'আনকে "নূর" বলেছেন (আ'রাফ ১৫৭.তাগাবুন :৮ ) উক্ত আয়াতসমূহে "নূর"বলতে হেদায়েতর আলো বা নুরের কথা বলা হয়েছে । আল্লাহর নুরের অংশ বুঝানো হয়নি , কোন সৃষ্টিকে আল্লাহর নুরের অংশ স্থাপন করা তো শিরক ............... ।

৩/নবী রাসূল ওয়ালি আওউলিয়ারা গায়েব জানত!

আল্লাহ বলেন :قُل لَّا يَعْلَمُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ ۚ وَمَا يَشْعُرُونَ أَيَّانَ يُبْعَثُونَ.
তাদেরকে বল, আল্লাহ ছাড়া পৃথিবীতে ও আকাশে কেউ অদৃশ্যের জ্ঞান রাখে না৷ এবং তারা জানেনা কবে তাদেরকে উঠিয়ে নেয়া হবে ৷ (আন-নামল ৬৫ )

এখানে মূলে "গায়েব" শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে৷ গায়েব মানে প্রচ্ছন্ন লুকানো অদৃশ্য বা আবৃত৷ পারিভাষিক অর্থে গায়েব হচ্ছে এমন জিনিস যা অজানা এবং যাকে জানার উপায়-উপকরণগুলো দ্বারা আয়ত্ব করা যায় না৷ দুনিয়ায় এমন বহু জিনিস আছে যা এককভাবে কোন কোন লোক জানে এবং কোন কোন লোক জানে না৷ আবার এমন অনেক জিনিস আছে যা সামগ্রিকভাবে সমগ্র মানব জাতি কখনো জানতো না, আজকেও জানে না এবং ভবিষ্যতেও কখনো জানবে না৷ জ্বিন, ফেরেশতা ও অন্যান্য সৃষ্টির ব্যাপারেও এই একই কথা৷ কতক জিনিস তাদের কারো কাছে প্রচ্ছন্ন এবং কারো কাছে প্রকাশিত৷ আবার অসংখ্য জিনিস এমন আছে যা তাদের সবার কাছে প্রচ্ছন্ন ও অজানা৷ এ সব ধরনের অদৃশ্য জিনিস একমাত্র একজনের কাছে দৃশ্যমান৷ তিনি হচ্ছেন মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ৷ তাঁর কাছে কোন জিনিস অদৃশ্য নয়৷ সবকিছুই তাঁর কাছে সুস্পষ্টভাবে পরিদৃশ্যমান৷

তাই আল্লাহ ছাড়া আর কেউ অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী নয়৷ এটি ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস৷ আলাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে চান যতটুকু চান জ্ঞান দান করেন৷ কোন অদৃশ্য বা কতগুলো অদৃশ্য জিনিসকে তার সামনে উন্মুক্ত করে দেন৷ কিন্তু অদৃশ্য জ্ঞান সামগ্রিকভাবে কেউ লাভ করতে পারে না এবং "আলেমুল গায়েব" অদৃশ্য জ্ঞানী উপাধি একমাত্র আল্লাহ রব্বুল আলামীনের সাথে সংশিষ্ট৷ আল্লাহ বলেন :
وَعِنْدَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لَا يَعْلَمُهَا إِلَّا هُوَ-
"আর তাঁর কাছেই আছে অদৃশ্যের চাবিগুলো, সেগুলো তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না৷" (আন'আম ৫৯ আয়াত)

তিনি আরো বলেন :
إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ-
"একমাত্র আল্লাহই রাখেন কিয়ামতের জ্ঞান৷ তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন৷ তিনিই জানেন মাতৃগর্ভে কি (লালিত) হচ্ছে, কোন প্রাণী জানে না আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে এবং কোন প্রাণী জানে না কোন ভূমিতে তার মৃত্যু হবে৷" (লুকমান ৩৪ আয়াত)

তিনি আরো বলেন : يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ
"তিনি জানেন যা কিছু সৃষ্টির সামনে আছে এবং যা কিছু আছে তাদের অগোচরে৷ আর তাঁর জ্ঞানের কিছুমাত্র অংশও তারা আয়ত্ব করতে পারে না, তবে তিনি যে জিনিসটির জ্ঞান তাদেরকে দিতে চান, দেন৷" (আল বাকারাহ ২৫৫ আয়াত)

কোন সৃষ্টি অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী হতে পারে এ ধারণা কুরআন সর্বতোভাবে নাকচ করে দেয়৷ এমনকি বিশেষভাবে আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম এবং স্বয়ং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যাপারেও এ বিষয়টি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেয় যে, তিঁনি অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী নন এবং তাঁকে অদৃশ্যের কেবলমাত্র ততটুকু জ্ঞান আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে যতটুকু রিসালাতের দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রয়োজন ছিল৷ সূরা আন'আম ৫০ আয়াত, সূরা আ'রাফ ১৮৭ আয়াত ,সূরা তাওবাহ ১০১ আয়াত, সূরা হূদ ৩১ আয়াত, সূরা আহযাব ৬৩ আয়াত, সূরা আহকাফ ৯ আয়াত, সূরা তাহরীম ৩ আয়াত এবং সূরা জ্বিন ২৬ আয়াত এ ব্যাপারে কোন প্রকার অনিশ্চয়তা ও সংশয়ের অবকাশই রাখেনি৷

কুরআনের এ সমস্ত সুস্পষ্ট ভাষণ আলোচ্য আয়াতটির বক্তব্য সমর্থন ও ব্যাখ্যা করে এর পর এ ব্যাপারে আর কোন সন্দেহের অবকাশ থাকে না যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী মনে করা এবং যা কিছু আছে ও যা কিছু হবে এর জ্ঞান আল্লাহ ছাড়া আর কারো আছে৷ এ কথা মনে করা পুরোপুরি একটি অনৈসলামী বিশ্বাস৷ বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ, ইমাম আহমদ, ইবনে জারীর ও ইবনে আবী হাতেম নির্ভুল বর্ণনা পরস্পরায় আয়েশা (রা) থেকে উদ্ধৃত করেছেন :

عن زعم انَّه (اى النَّبى صلى الله عليه وسلم) يعلم ما تكون فى غدٍ فقد اعظم على الله الفرية والله يقول قل لاَّ يعلم من فى السَّموات والارض الغيب الا الله -

"যে ব্যক্তি দাবী করে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগামী কাল কি হবে তা জানেন, সে আলাহর প্রতি মহা মিথ্যা আরোপ করে৷ কারণ আল্লাহ তো বলেন, হে নবী! তুমি বলে দাও আল্লাহ ছাড়া আকাশ ও পৃথিবীর অধিবাসীদের মধ্যে আর কেউ অদৃশ্যের জ্ঞান রাখে না৷"
ইবনুল মুনযির আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসের (রা) প্রখ্যাত শিষ্য ইকরামা থেকে বর্ণনা করেছেন : এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলো, "হে মুহাম্মাদ! কিয়ামত কবে আসবে? আমাদের দুর্ভিক্ষ পীড়িত এলাকায় বৃষ্টি কবে হবে? আর আমার গর্ভবতী স্ত্রী ছেলে না মেয়ে প্রসব করবে? আর আজ আমি কি উপার্জন করেছি তাতো আমি জানি কিন্তু আগামীকাল আমি কি উপার্জন করবো? আর আমি কোথায় জন্মেছি তাতো আমি জানি কিন্তু আমি মরবো কোথায়?" এ প্রশ্নগুলোর জবাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইতিপূর্বে আমাদের উল্লেখিত সূরা লুকমানের আয়াতটি শুনিয়ে দেন৷ এছাড়া বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য হাদীস গ্রন্থের একটি বহুল পরিচিত হাদীসও এর সমর্থন করে, যাতে বলা হয়েছে : সাহাবীগণের সমাবেশে জিবরীল মানুষের বেশে এসে নবীকে যে প্রশ্ন করেছিলেন তার একটি এও ছিল যে, কিয়ামত কবে হবে? নবী (সা) জবাব দিয়েছিলেন,

ما المسئول عنها باعلم من الالسائل -

"যাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে সে জিজ্ঞাসাকারীর চেয়ে এ ব্যাপারে বেশী জানে না৷"

তারপর বলেন, এ পাঁচটি জিনিসের জ্ঞান আল্লাহ ছাড়া আর কারো নেই৷ এ সময় তিনি উল্লেখিত আয়াতটি পাঠ করেন৷


৮৪. অর্থাৎ অন্যরা, যাদের সম্পর্কে ধারণ করা হয় যে, তারা অদৃশ্য জ্ঞানের অধিকারী এবং এ জন্য যাদেরকে তোমরা আল্লাহর সার্বভৌম কর্তৃত্বে শরীক করে নিয়েছো, তারা নিজেরা তো নিজেদের ভবিষ্যতের খবর রাখে না৷ তারা জানে না, কিয়ামত কবে আসবে যখন আল্লাহ পুনর্বার তাদেরকে উঠিয়ে দাঁড় করাবেন৷


মহানবি(সাঃ)-এর দেহ মোবারক কি মাটির- না কি নুরের ছিল???

নুরের তেরি ফেরেসতামনডলি। মহানবি আদমের অন্যতম সনতান। সুতরাং তারও আদি সৃষটি মাটি থেকেই।

মহানবি(সাঃ) আমাদের মত রকতো, মাংস ও হাড়ের গড়া মানুষ ছিলেন। আমাদের মত পিতার ওরশে ও মাতার গভে তার জনমো হয়েছিল। আমাদের মত তিনি খেতেন ও পান করতেন। সুসথো-অসুসথো থাকতেন। বিসৃত হতেন, সরণ করতেন। বিবাহ-শাদি করেছেন, তার একাধিক জিবনসংগি ছিল। তিনি সনতানের জনক ছিলেন। তিন
ি ব্যবসা-বানিজ্য করতেন। দুঃখ-শোক, ব্যথা ও যনতরোনা অনুভব করতেন। তার মুএ-মল ছিল(পসৃাব-পায়খানা) এবং তা অপবিএ ছিল। তার নাপাকির জন্য অজু-গোসলের দরকার হতো। জিবিত ছিলেন এবং ইনতেকাল করেছেন। মানুষের সকল গুনাবলি তার মাঝে ছিল। তবে কোন মানুষই তার মত(সমান) নয়। আমরা তার মত মানুষ নই। সব বিষয়ে আমরা কেউই তার মত নই। তার দেহে ঘাম হত বা ছিল; কিনতু সেই ঘাম আমাদের মত নয়- তার ঘামে সুগনধ ছিল। তিনি ঘুমাতেন এবং জেগে উঠতেন। তার দেহ ও দেহ থেকে বিচছিনন চুল, থুথু, তার ব্যবহৃত জিনিস বরকতময় ছিল।
*** তিরমিজি: ৪৩৯, ২৪৯১; মুসলিম: ১১০৩, ১৭৫৭, ১৮২৬, ৩২১৩, ৬২০১; মিশকাত-১৯৮৬; বুখারি: ৮৫৯, ১১৪৭; আবু দাউদ: ২০২, নাসাই: ১৬৯৭।

মহান আললাহ তার নবি(সাঃ)কে বলেন:

"বলুনঃ আমি ও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে"।
*** সুরা কাহফ: আয়াত-১১০

আললাহ আরও বলেছেন:

"বলুন, আমিও তোমাদের মতই মানুষ, আমার প্রতি ওহী আসে যে, তোমাদের মাবুদ একমাত্র মাবুদ, অতএব তাঁর দিকেই সোজা হয়ে থাক এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। আর মুশরিকদের জন্যে রয়েছে দুর্ভোগ"।
*** সুরা হা-মিম সাজদাহ: আয়াত-৬।

আললাহ কুরআনে আরও বলেছেন:

"আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না?"
*** সুরা আন'আম: আয়াত-৫০।

মানুষ সৃষটি সমপরকে আললাহ আরও বলেন:

আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি। **আয়াত-১২
অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি। **আয়াত-১৩
এরপর আমি শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর জমাট রক্তকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই মাংস
পিন্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি, অবশেষে তাকে নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছি। নিপুণতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কত কল্যাণময়। **আয়াত-১৪
এরপর তোমরা মৃত্যুবরণ করবে। **আয়াত-১৫
অতঃপর কেয়ামতের দিন তোমরা পুনরুত্থিত হবে। **আয়াত-১৬
*** সুরা মুমিনুন: আয়াত: ১২-১৬

নবিজি(সাঃ) একজন আমাদের মতই মানুষ ছিলেন। উপরোকতো সুরা মুমিনুন-এর আয়াত গুলো থেকে পরিষকার বুঝতে পারলাম যে, মানুষ মাটির দারা সৃষটি এবং মাটিতেই মিশে যাবে। আর মহানবি(সাঃ)কেও মৃত্যুর পর একজন মানুষের মত মাটিতেই দাফন করা হয়েছে। তবে উললেখ্য যে, কেউ তার জানাযায় ইমামতি করেন নাই। দশ জন, দশ জন করে সবাই তার জানাযার সালাত/দু'আ পড়েছেন। তারপর নবিজি(সাঃ)'কে আয়েশা(রাঃ)-এর ঘরে দাফন করা হয়েছে।

তিনি আললাহ'র তরফ থেকে অনধকারে নিমজজিত পথহারা মানুষের জন্য আললাহ পেরিত নুর(জ্যোতি বা আলো) ছিলেন। সেই নুর বা আলোতে জাহেলিয়াতের তমসাচছনন যুগ ও সমাজ আলোকিত হল। তার দেহ নুরানি ছিলো কিনতু তিনি নুর বা নুর থেকে সৃষটি ছিলেন না। মহান আললাহ'র সৃষটি বৃততানতে একমাএ ফেরেসতাই নুর থেকে সৃষটি। আর নবিজি(সা:) ফেরেসতাও ছিলেন না।

সব সৃষটির আগে আললাহ রাববুল আলামিন তার আরশ ও কলম সৃষটি করেন। *** আহমাদ: ৫/৩১৭।

এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে জানতে পারছি যে, নবিজি(সা:) আমাদের মতই একজন মাটির মানুষ ছিলেন। তিনি নুরের তেরি ছিলেন না। কারন ফেরেসতারা নুরের তেরি আর মানুষ মাটির তেরি।
নুরে মোহামমাদি আললাহ'র পয়লা/পথম সৃষটি নয়। যে হাদিসে নুরে মোহামমাদির কথা বলা হয়েছে তা বাতিল হাদিস।

[[[**দেখুন জাল হাদিস:
<<<রাসূল (স.) সম্পর্কে জাল বা বানোয়াট হাদীছ:
১) জাবের (রাঃ) একদা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ছাঃ)! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হউক। আপনি বলুন, আল্লাহ তা‘আলা সর্বপ্রথম কোন বস্তু সৃষ্টি করেছেন? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) উত্তরে বললেন, হে জাবের! আল্লাহ তা‘আলা সর্বপ্রথম তাঁর নূর দ্বারা তোমার নবীর নূর সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা সে নূরকে কয়েক ভাগে বিভক্ত করে এক ভাগ দ্বারা কলম, এক ভাগ দ্বারা লাওহে মাহফূয ও একভাগ দ্বারা আরশে আযীম সৃষ্টি করেছেন। এভাবে ক্রমান্বয়ে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, আসমান-যমীন ফেরেশতা, জিন প্রভৃতি সৃষ্টি হয়ে থাকে। (মৌলভী মুহাম্মদ যাকির হুসাইন, মুকাম্মাল মীলাদে মুস্তফা (সঃ), পৃঃ ৪১। ) এই হাদীছটি বাতিল, কোন হাদীছ গ্রন্থে হাদীছটি পাওয়া যায় না।
(২) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেছেন, অর্থাৎ আল্লাহ রাববুল আলামীন সর্বপ্রথম আমার নূরকে সৃষ্টি করেছেন। (মুকাম্মাল মীলাদে মুস্তফা (সঃ), পৃঃ ৭৭। ) এটা হাদীছ নয়; বরং ছূফীদের বানোওয়াট কথা।>>>।]]]

মুহামমাদ(সাঃ)-এর সৃষ্টি নিয়ে ওনেক জাল ও বানোয়াট হাদিস এবং কলপকাহিনি আছে যা এখানে উললেখ করা দরকার মনে করছিনা না এবং ঐ সমসত জাল ও বানোয়াট কথা এখানে উললেখ করে মুহামমদ(সাঃ)-এর সৃষ্টি'কে ওসম্মান করা হবে।

সারকথা হল, তিনি যদি নুরের তেরি হতেন তাহলে তার বুক ফাড়ার ঘটনা ঘটতো না। দুধ ছাড়ানোর পরও শিশু মোহামমাদ বনু সা'দ গোএএই দুধমাতা হালিমা'র কাছেই ছিলেন। তার বয়স যখন ৪-৫ বছর তখন তার "বুক ফাড়ার" ঘটনা ঘটে।
*** ইবনে হেশাম: ১ম খনড; ১৬৪-১৬৫।

এই ঘটনার বিসতারিত বিবরণ আনাস(রা:) থেকে বরনিত হয়েছে: তিনি বলেন: "জিবরাইল(আঃ) রাসুল(সাঃ) এর কাছে আগমন করেন। এই সময় তিনি অন্য শিশুদের সাথে খেলা করছিলেন। জিবরাইল(আঃ) তাকে শুইয়ে বুক চিরে 'দিল' বের করে তা থেকে রকতো পিনড বের বললেন, এটা আপনার মাঝে শতানের অংশ। এরপর 'দিল' একটি তসতরিতে রেখে জমজম কুপের পানি দিয়ে ধুয়ে তারপর দেহের যথাসথানে সথাপন করেন। ঐ দিকে অন্য শিশুরা ছুটে গিয়ে তার ধাতরিমাতা হালিমাকে বললো, মোহামমাদ'কে মেরে ফেলা হয়েছে। এ কথায় পরিবারের লোকেরা ঝটপট ছুটে এসে দেখলো, তিনি বিবরনো/ফ্যাকাশে মুখে বসে আছেন"।
*** সহিহ মুসলিম: ইসরা অধ্যায়: ১ম খনড-৯২।

নবিজি(সাঃ) মাটির তেরি/সৃষটি এতে বিনদু মাএ সনদেহ নাই। তাই, আমাদের উপলবধির জন্য নিজের মনগড়া কথা না লিখে কুরআন ও হাদিস থেকেই উদধৃতি দেওয়া হল যাতে আমাদের ভুলের নিরসন হয়। আললাহ আমাদের সঠিক পথে হেদায়েত দিন এবং সত্য উপলবধির তৌফিক দান করুন। আমিন। আমিন। আমিন।