প্রশ্নঃ (৭৫) গণক কাকে বলে ? গণকের কাছে যাওয়ার বিধান কি ?

প্রশ্নঃ (৭৫) গণক কাকে বলে ? গণকের কাছে যাওয়ার বিধান কি ?

উত্তরঃ গণক এমন লোককে বলা হয়, যে অনুমানের উপর নির্ভর করে ভিত্তিহীন বিষয়ের অনুসন্ধান করে থাকে। জাহেলী যামানার কিছু পেশাদার লোকের সাথে শয়তানের যোগাযোগ ছিল। শয়তানেরা চুরি করে আকাশের সংবাদ শ্রবণ করত এবং তাদের কাছে বলে দিত। আকাশ থেকে যা শ্রবণ করত, তার সাথে আরো অনেক মিথ্যা কথা সংযোগ করে মানুষের মধ্যে তা প্রকাশ করত। তারা যা বলত, তার একটি কথা সত্য হলে মানুষ ধোকায় পড়ে যেত এবং অন্যান্য সমস্যার সমাধানের জন্য ও ভবিষ্যতে কি হবে, তা জানতে গণকদের কাছে আসা শুরু করত। এই জন্যই আমরা বলি যে, গণক হচ্ছে সেই লোক, যে ভবিষ্যতের অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে সংবাদ দিয়ে থাকে। যারা গণকের কাছে আসে, তারা তিনভাগে বিভক্তঃ

(১) গণকের কাছে এসে তাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা এবং তার কথায় বিশ্বাস না করা। এটা হারাম। এ ধরণের লোক সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
مَنْ أَتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَيْءٍ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً

“যে ব্যক্তি গণকের কাছে গিয়ে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করল, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার নামায কবূল হবে না।”

(২) গণকের কাছে এসে তাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা এবং তার কথায় বিশ্বাস করা। এটা আল্লাহর সাথে কুফরী করার অন্তর্ভূক্ত। কারণ সে ইলমে গায়েবের দাবীতে গণককে বিশ্বাস করেছে। মানুষ ইলমে গায়েব জানে বলে বিশ্বাস করলে আল্লাহর কথাকে অবিশ্বাস করা হবে।

আল্লাহ বলেনঃ
قُلْ لَا يَعْلَمُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ
“বলুন, আকাশ এবং জমিনে আল্লাহ ছাড়া গায়েবের সংবাদ অন্য কেউ জানে না।” (সূরা নমলঃ ৬৫)

ছহীহ হাদীছে এসেছে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ أَتَى كَاهِنًا فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

“যে ব্যক্তি কোন গণকের নিকট গমণ করে তার কথায় বিশ্বাস করল, সে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর উপর অবতীর্ণ বিষয় (কুরআন ও সুন্নাহ)র সাথে কুফরী করল।” এ ধরণের মানুষ তাওবা না করে মৃত্যু বরণ করলে কুফরী অবস্থায় তার মৃত্যু হবে।

(৩) গণককে পরীক্ষার জন্য এবং মানুষের সামনে তার ধোঁকাবাজির কথা তুলে ধরার জন্য তার কাছে যেতে কোন অসুবিধা নেই। ইবনু সায়্যাদ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর কাছে আগমণ করলে তিনি মনের মধ্যে একটি কথা গোপন করে ইবনে সায়্যাদকে জিজ্ঞাসা করলেন, বল তো আমি কি গোপন করেছি? ইবনে সায়্যাদ বলল, আদ্-দুখ্ অর্থাৎ আদ্-দুখান (ধোঁয়া)। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, অকল্যাণ হোক তোমার! তুমি তোমার সীমা অতিক্রম করতে পারবে না