মুরতাদ , যে ১০ টি কারণে মানুষ ইসলাম থেকে বেরহয়ে মুরতাদ হয়ে যায় .





মুরতাদ  যে ১০টি কারণে মানুষ ইসলাম থেকে বেরহয়ে  মুরতাদ হয়ে যায় .


সুপ্রিয় ভাই ও বোন  যে সমস্ত কারণে একজন মুসলমান ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় বা মুরতাদ হয়ে যায় সেগুলো জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলো হল ১০। নিন্মে সেগুলো তুলে ধরা হল:

 ১) ইবাদতের ক্ষেত্রে শির্‌ক করা। যেমন: আল্লাহ ছাড়া অন্য ওলী-আওলিয়া, মাযার-দরবার ইত্যাদির কাছে বিপদাপদে সাহায্য চাওয়া বা তাদের ওসীলায় কোন কিছু প্রার্থনা করা, মাযারে মান্নত করা, জিনের উদ্দেশ্যে মুরগী, ছাগল ইত্যাদি জবেহ করা ইত্যাদি।

► রাসূল (সাঃ) বলেন - যে আল্লাহ আমাকে সৃষ্টি করেছেন তার সাথে আর কাউকে অংশীদার  স্থাপন করা সবচেয়ে বড় গুনাহ (বুখারী ও মুসলিম )
 ➥ আল্লাহ বলেন -  إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ  নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা মহা অন্যায় (লোকমান ১৩)
► আল্লাহর ঘোষণা . إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ  নিশ্চয় যে বুয়াক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করে , আল্লাহ তার জন্য জন্নাত হারাম করে দেন এবং তার বাসস্থান জাহান্নাম . অত্যাচারী , জালেমদের কোনো সাহায্যকারী নেই . রাসূল (সাঃ) বলেছেন , আল্লাহ ব্যতীত অন্যের ইবাদত করা অবস্থায় যোদি কারো মৃত্যু হয় তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে (বুখারী )

 ২) কাফের-মুশরিকদের কুফরীর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করা বা তাদেরকে কাফের-মুশরিক মনে না করা অথবা তাদেরকেও সঠিক পথের অনুসারী মনে করা।
► ইগুদী-খৃষ্টান এবং অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরা সকলেই কাফের . যদিও তারা  এমন ধর্মের অনুসরণ করে যার মূল হচ্ছে সঠিক  . নবী (সাঃ ) এর  আগমনের পড় যে লোক নিজের ধর্ম পরিত্যাগ না করে এবং ইসলাম গ্রহণ না করে আল্লাহ বলেন - وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ এ আনুগত্য ( ইসলাম) ছাড়া যে ব্যক্তি অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে চায় তার সে পদ্ধতি কখনোই গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে হবে ব্যর্থ, আশাহত ও বঞ্চিত ৷ (ইমরান ৮৫) 
কোনো মুসলমান যোদি তাদের কাফের না বলে বা তাদের ধর্ম বাতিল হবার ব্যাপারে সন্দেহ -শংসয় করে , তবে সেও কাফের হয়ে যাবে কেননা সে তাদের কাফের হবার ব্যাপারে আল্লাহ ও তাঁর নবীর বিধানের বিরুদিতা করেছে . 
 আল্লাহ বলেন -  وَمَن يَكْفُرْ بِهِ مِنَ الْأَحْزَابِ فَالنَّارُ مَوْعِدُهُ আর মানব গোষ্ঠীর মধ্য থেকে যে-ই (কুরআন) অস্বীকার করে তার জন্য যে জায়গার ওয়াদা করা হয়েছে তা হচ্ছে দোযখ৷ 
নবী  (সাঃ) বলেন -   وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَا يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ يَهُودِيٌّ وَلَا نَصْرَانِيٌّ ثُمَّ لايومن بي إلا دخل النار  শপথ  সেই সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ , আই উম্মতের মধ্যে থেকে ইহুদী- হোক বা খৃষ্টান হোক কোনো ব্যক্তি যোদি আমার সম্পর্কে শোনে অতপর আমাকে যে শরিয়ত দিয়ে প্রেরণ করা হয়েছে তার উপর ঈমান না আনে মৃত্যু বরণ করে , তবে সে জাহান্নামের অধিবাসী হবে (মুসলিম )

►উমর রাঃ এর মত আমরাও বলতে চাই যে, আমরা যে কোন মুসলিমের ব্যাপারে রায় দেব তার বাহ্যিক আমলে আর অন্তরে কি আছে তা আল্লাহ ছাড়া আর কার জানা নেই । যদি ঐ ব্যক্তির অন্তর শুদ্ধ হতো তবে তা তার শারীরিক 'আমল,যথা; সালাত, যাকাত ও অন্যান্য ফরজ ইবাদতের মাধ্যমে প্রকাশ পেত এবং (হিন্দু,খ্রিস্টান , বৌদ্ধ,জৈন ও অন্যান মুশরিক জাতি সাথে কুফরী করত ,করতে তাকে দেখা যেত ।
আবদুললাহ ইবনে মাসউদ(রা:)বলেন, আমি উমর ইবনুল খাততাব(রা:)কে বলতে শুনেছি: রাসুলুললাহ সাললাললাহু আলাইহি ওয়াসসালাম-এর যুগে 'ওয়াহি'র মাধ্যমে মানুষকে যাচাই করা হতো। আর এখনতো ওয়াহি নাযিল হওয়া বনধ হয়ে গেছে। সুতরাং, এখন আমরা তোমাদের মুল্যায়ন করবো তোমাদের বাহ্যিক কাজ-করমের উপর ভিততি করে। যে ব্যাকতি আমাদের সামনে ভাল কাজের পৃকাশ ঘটাবে, আমরা তাকে বিশৃাস করবো এবং আমরা তাকে আমাদের নিকটবরতি বলে গৃহন করবো। তার আভ্যনতরিন ওবসথা দেখার আমাদের দরকার নাই। আর যে ব্যাকতি খারাপ কাজ করবে, যদিও সে দাবি করে তার আভ্যনতরিন ওবসথা ভাল, তবুও আমরা তার কথা মেনে নেব না এবং বিশৃাস করবো না। *** বুখারি: ৩/২২১।


 ৩) আল্লাহ তা’আলার নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে কোন ‘মাধ্যম’ ধরে তার নিকট দু’আ করা বা তার নিকট সুপারিশ প্রার্থনা করা অথবা তার উপর পরকালে নাজাত পাওয়ার ভরসা করা। যেমন, উমুক ওলী একজন ‘কামেল পীর’ তার ওসীলায় চাইলে আল্লাহ আমাকে অবশ্যই দিবেন, অথবা তাঁকে খুশি করতে পারলে আল্লাহ তা’আলা আমার উপর খুশি হয়ে যাবেন ইত্যাদি।

 আল্লাহর দরবারে আশ্রয় নিচ্ছি, আল্লাহ তা'আলা যাকে হিদায়াত করেন তাকে গোমরাহ করার কেউ নেই। আর যাকে গোমরাহ করেন তাকে হেদায়াত করার কেউ নেই, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মাবুদ নেই, তার কোন শরীক নেই, আর ও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। 

স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে মাধ্যম মানার ব্যাপারটা অত্যন্ত বিপজ্জনক বিষয়। পরিতাপের বিষয় যে, অনেক মুসলমানই এ সম্পর্কে পরিষ্কার কোন ধারণা রাখেনা। ফলে আমরা আল্লাহর সাহায্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হতে চলেছি, যে সাহায্য করার কথা তিনি কুরআনে তাঁর কাছে আশ্রয় কামনা এবং তাঁর শরীয়তের অনুসরণ করার শর্তে ঘোষণা করেছেন।
 আল্লাহ বলেন : (আর মু'মিনদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব)। {সূরা আর-রূম: ৪৭} (যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর তবে তিনিও তোমাদের সাহায্য করবেন, এবং তোমাদের পদযুগলে স্থিতি দিবেন)। {সূরা মুহাম্মাদ: ৭} 
                              আল্লাহকে পেতে মাধ্যম গ্রহণ-
যে ব্যক্তি হুজ্জত ও দলীল চায়  তার জন্য কুরআন যথেষ্ট , যে ব্যক্তি রক্ষাও সাহায্য কারী চায় তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট , যে ব্যক্তি উপদেষ্টা চায় তার জন্য মৃত্যুই যথেষ্ট . আর যে ব্যক্তির জন্য এ সবের কিছুই যথেষ্ট নয় তার জন্য জাহান্নামই যথেষ্ট .- আল্লাহ বলেন - أَلَيْسَ اللَّهُ بِكَافٍ عَبْدَهُ আল্লাহ কি তাঁর বান্দার পক্ষে যথেষ্ট নন?(যুমার ৩৬)
রাসূল (সাঃ) বলেন যখন তুমি কিছু চাও তখন আল্লাহর কাছে চাও (তিরমিযী হাসান সহীহ বলেছেন ) এক কবি বলেন দূর হয়ে যাক বিপদ মোদের -আল্লাহর নিকট চাই, আল্লাহ ছাড়া বিপত্তারণ আর তো কেহ নাই .

শায়েক আব্দুল কাদের জিলানী আল-ফাতহুর রাব্বানী তে বলেন, আল্লাহর নিকট পার্থনা করো এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্নের নিকট পার্থনা বা সাহায্য চেওনা ....
নেককার বান্দাদেরকে যারা অসীলা হিসাবে গ্রহণ করে এমন মুর্খ, চেতনাহীন লোকদেরকে আল্লাহ তা'আলা পরিহাস করেছেন কারণ তারা নেককার বান্দাদেরকে অসীলা বানাচ্ছে, অথচ নেককার বান্দারা নিজেরাই এই অসীলা তথা আল্লাহর আনুগত্য দ্বারা নৈকট্য হাসিলের অধিক মুখাপেক্ষী।
আর এ ছাড়া আল্লাহর নৈকট্য লাভের দ্বিতীয় কোন পথ নেই, যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেছেন: (তারা যাদের আহবান করছে তারা নিজেরাই তাদের প্রভূর নৈকট্য লাভের জন্য অসীলা খুঁজছে। তারা তার রহমতের আশা করছে, তার শাস্তির ভয় করছে, নিশ্চয়ই আপনার প্রভুর শাস্তি ভীতিপ্রদ)। {সূরা আল-ইসরা: ৫৭} 


বড়ই পরিতাপের বিষয় যে, এ সমস্ত অমনযোগী লোকেরা যাদেরকে মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করেছে তাদের সত্তার উপর ভরসা করে থাকার ফলে নেক আমল করা থেকে বিরত থাকছে, খারাপ কাজে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। যা মুসলমানদের অধঃপতনের কারণ হয়েছে। তারা ভুলে গেছে বা ভুলে থাকার ভান করছে যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁর রাসূলকে - যিনি সমস্ত মানব সন্তানের নেতা - তাঁকে সম্বোধন করে বলেছেনঃ (বলুনঃ আমি আমার নিজের কোন উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখিনা)। {সূরা আল-আ’রাফ: ১৮৮


৪) এ বিশ্বাস পোষণ করা যে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আদর্শের চেয়ে অন্য কোন ব্যক্তির মতাদর্শ উত্তম বা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনীত জীবন ব্যবস্থার চেয়ে অন্য কোন ধর্ম বা মতবাদ ভাল। যেমন, কেউ যদি বিশ্বাস করে যে, সমাজতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা, ডারউইনের মতবাদ ইত্যাদি ইসলামের চেয়ে ভাল তবে সে মুরতাদ হয়ে যাবে।



 আল্লাহ তাআলা বলেন:
قُلْ أَبِاللَّهِ وَآَيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ ﴿৬৫﴾ لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ
“বল! তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর নিদর্শন ও তাঁর রাসূলকে বিদ্রুপ করছিলে? তোমরা আর অজুহাত দাড় করো না, তোমরা তো ঈমান আনার পর কুফরী করেছ।” (সূরা আত-তাওবা: ৬৫-৬৬)

এমন কে আছেন যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শাফায়াতের প্রত্যাশা করেন না?


আল্লাহ তা'আলা বলেন :  قُلْ أَطِيعُواْ اللَّهَ وَالرَّسُولَ فإِن تَوَلَّوْاْفَإِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ الْكَافِرِينَ ‘বলতোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর। তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়তবে নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদেরকে ভালবাসেন না’ (সূরা আলে-ইমরান: ৩২) 


আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন منْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللّهَ وَمَن تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظاً ‘যে রাসূলের আনুগত্য করলসে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হলতবে আমি তোমাকে তাদের ওপর তত্ত্বাবধায়ক করে প্রেরণ করিনি’ (সূরা নিসা: ৮০) 


আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন .﴿وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ ۗ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُّبِينًا﴾
যখন আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোনো বিষয়ের ফায়সালা দিয়ে দেন তখ কোনো মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীর সেই ব্যাপারে নিজে ফায়সালা করার কোনো অধিকার নেই৷ আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নাফরমানী করে সে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত হয়৷(আহযাব ৩৬) 
﴿فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا﴾
 না, হে মুহাম্মদ ! তোমার রবের কসম, এরা কখনো মুনিন হতে পারে না যতক্ষণ এদের পারস্পারিক মতবিরোধের ক্ষেত্রে এরা তোমাকে ফায়সালাকারী হিসেবে মেনে না নেবে, তারপর তুমি যা ফায়সালা করবে তার ব্যাপারে নিজেদের মনের মধ্য যে কোন প্রকার কুণ্ঠা ও দ্বিধার স্থান দেবে না, বরং সর্বান্তকরণে মেনে নেবে৷ (নিসা ৬৫) 
''তোমাদের কোন ব্যক্তি মু'মিন হতে পারবে না যতক্ষণ না তার প্রবৃত্তি আমি যে পদ্ধতির প্রবর্তন করেছি তার অধীনত স্বীকার করে নেবে"৷ 

 ৫) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নির্দেশিত কোন বিষয়কে মনে মনে ঘৃণা করা যদিও সে তা পালন করে। যেমন, কেউ যদি দাঁড়ি, পর্দা ইত্যাদিকে মনে মনে অপছন্দ করে তবে সে মুসলমান থাকবেনা। কারণ, এগুলো ইসলামের আবশ্যপালণীয় নির্দেশ‍।

 ►আল্লাহ তাআলা বলেন:
ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ
“এটি এ জন্য যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তারা তা অপছন্দ করে, সুতরাং আল্লাহ তাদের কর্মসমূহকে নিষ্ফল করে দেবেন”(সূরা মুহাম্মাদ: ৯)

আল্লাহ আরো বলেন : وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍوَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَوَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُبِينًا  ‘আল্লাহ ও তার রাসূল কোনো কাজের আদেশ করলে কোনো ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে এ অধিকার নেই যেসে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করে। আর যে আল্লাহ ও  তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হয়’ (সূরা আহযাব: ৩৬)

রাসূল (সাঃ)বলেন -

এক হাদীসে এসেছে : كُلِّ أُمَّتِيْ يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ إِلَّامَنْ أَبَىْ  قَالُوْا وَمَنْ يَأْبَىْ  قَالَ  مِنَ أَطَاعَنِيْ دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِيْ فَقَدْ أَبَىْ   আবু হুরাইরা রাযি. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যেআমার প্রতিটি উম্মত জান্নাতে যাবে। তবে যে অস্বীকার করে সে নয়। সাহাবায়ে কেরাম বললেন,অস্বীকারকারী কেনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনযে আমার অনুকরণ করল সে জান্নাতে যাবে। আর যে আমার নাফরমানী করলসে-ই অস্বীকারকারী’ (বুখারী) 


আল্লাহ বলেনঃ হে নবী! আপনার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট এবং মুমিনদের মধ্য থেকে যারা আপানাকে অনুসরণ করে তাদের জন্য।” [সূরা আনফালঃ ৬৪]

৬) ইসলামের কোন বিষয়কে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা বা হেয় মনে করা।

  মুনাফেকদের প্রথম পরিচয় ছিল, তারা মুসলমানদেরকে নিয়ে হাসি তামাশা করতো, তাদেরকে বোকা ভাবতো। আল্লাহ পাক তাদেরকে ধমক দিয়ে বলেছেন, ‘তারাই বোকা অথচ নিজেরা তা জানে না।’ (সূরা বাকারা-১৩) 

ইমাম ইবনে কুদামাহ লিখেছেন, যে আল্লাহকে স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় গালি দিল, কিংবা যে আল্লাহ বা তার রাসূল কিংবা দ্বীনের কোন বিষয় নিয়ে ঠাট্টা করল, সে কাফের হয়ে গেল। (আল মুগনী) 

ইমাম নববী বলেন, স্বেচ্ছায় কিংবা কেউ যদি স্পষ্টভাবে এমন কোন কথা বলে যা আল্লাহ ও তার রাসূলের কোন বিধানকে তুচ্ছ করে, তা অবশ্যই কুফুরী।
ইমাম কুরতুবী লিখেছেন, মজা করার জন্য হোক বা সত্যি সত্যি হোক, ইসলামের কোন সাধারণ বিষয় নিয়ে হাসি তামাশা করা কুফুরী। এতে কারো দ্বিমত নেই।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেন, দ্বীনের যে কোন স্পষ্ট বিষয় নিয়ে ঠাট্টা করা কুফুরী। যে এমন করল তার ঈমান ধ্বংস হয়ে কুফুরীতে পরিণত হল। 
আজকাল হরহামেশা অনেক লেখক সাহিত্যিক ইসলাম নিয়ে তির্যক লেখা লিখেন, না জেনে না বুঝে এ বিষয়ে পান্ডিত্য দেখাতে গিয়ে ডুবে যান কুফুরীর অতল সাগরে। মুসলমানী নামটুকু ছাড়া তার আর কিছুই বাকী থাকেনা।
আল্লাহ পাক এমন লোকদেরকে বলছেন, ‘আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তারা বলবে, আমরা একটু হাসি তামাশা করছিলাম। আপনি বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহকে নিয়ে এবং তার আয়াতসমূহ ও তার রাসূলকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করছ? তোমরা কারণ দেখিয়ো না, তোমরা তো তোমাদের ঈমানের পরও কুফুরী করে ফেলেছো।’ (সূরা তওবা-৬৫-৬৬)
পবিত্র কুরআনে অভিশপ্ত জাতিদের যেসব ঘটনা বিবৃত রয়েছে, তারা তাদের নবীকে নিয়ে এভাবে ব্যঙ্গ করতো, নবীর অনুসারীদের নিয়ে পথে ঘাটে বিদ্রুপ করতো, আল্লাহ পাক তাদেরকে সমুচিত জবাব দিয়েছেন, পরকালেও তাদেরকে এর বদলা দিবেন। মদীনার মুনাফিকদের অবস্থাও ছিল এরকম। হাদীসের কিতাবসমূহে এর বিবরণ সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত।
৭) যাদু করা অথবা যাদু-তাবিজ ইত্যাদির মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকার মনের মিলন কিংবা বিচ্ছেদ ঘটানো।
আল্লাহ তাআল বলেন:
وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّى يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ
“তারা কাউকে (যাদু) শিক্ষা দিত না এ কথা না বলে যে, আমরা পরীক্ষা স্বরূপ; সুতরাং তুমি কুফরী কর না।”( আল-বাকারা : ১০২)
আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন,- আর তারা অবশ্যই অবগত আছে, যে ব্যক্তি যাদু অবলম্বন করে তার জন্যে পরকালে সামান্যতমও কোন অংশ নেই’। (সূরা বাকারাহঃ১০২)
আল্লাহ তায়ালা আরো এরশাদ করেছেন, “তারা জিবত ও তাগুতের প্রতি বিশ্বাস করে”। (সূরা নিসাঃ৫১)
হযরত উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, ‘জিবত’ হচ্ছে যাদু, আর ‘তাগুত’ হচ্ছে শয়তান। (ত্বাবারানী,৫৮৩৪)
হযরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, ‘তাগুত’ হচ্ছে গণক। তাদের উপর শয়তান অবতীর্ণ হতো। আর সাধারণত প্রত্যেক গোত্রের জন্যই একজন করে গণক নির্ধারিত ছিল। (ইবনে আবী হাতিম, ২/২২; সহীহ বুখারী, ৮/৩১৭)
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক জিনিস থেকে বেঁচে থাকো’। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ ঐ ধ্বংসাত্মক জিনিসগুলো কি?’ তিন জবাবে বললেন, ‘১ আল্লাহর সাথে শিরক করা ২যাদু করা ৩অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা যা আল্লাহ তায়ালা হারাম করে দিয়েছেন ৪সুদ খাওয়া ৫এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা ৬যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা ৭ সতী সাধ্বী মু’মিন মহিলাকে অপবাদ দেয়া’।(*৪) (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৭৬৬,৫৭৬৪; সহীহ মুসলিম,হাদীস নং ৮৯)
জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে ‘মারফু’ হাদীসে বর্ণিত আছে, “যাদুকরের শাস্তি হচ্ছে তলোয়ারের আঘাতে তার গর্দান উড়িয়ে দেয়া(মৃত্যুদণ্ড)”।(*৫) (জামে’ তিরমিযী, হাদীস নং ১৪৬)
সহীহ বুখারিতে বাজালা বিন আবাদাহ থেকে বর্ণিত আছে, ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু মুসলিম গভর্ণরদের কাছে পাঠানো নির্দেশ নামায় লিখেছিলেন, “তোমরা প্রত্যেক যাদুকর পুরুষ এবং যাদুকর নারীকে হত্যা কর”। বাজালা বলেন, ‘এ নির্দেশের পর আমরা তিনজন যাদুকরকে হত্যা করেছি’। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩১৫৬, সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৩০৪৩, মুসনাদ আহমাদ, ১/১৯০,১৯১)

৮) মুসলমানদের বিরুদ্ধে অমুসলিমদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা।


আল্লাহ তা'আলা বলেন:
وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
“তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন হবে, নিশ্চয় আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না”(সূরা আল-মায়িদাহ: ৫১)
আল্লাহ্‌ তায়ালা আরো বলেছেন -

لَا يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللَّهِ فِي شَيْءٍ إِلَّا أَنْ تَتَّقُوا مِنْهُمْ تُقَاةً 

অর্থাৎ,মুমিনরা যেন মুমিনদেরকে বাদ দিয়ে কাফির তথা অবিশ্বাসীদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করে। আর যে এটা করবে সে আল্লাহ্ তায়ালার দায়িত্ব থেকে মুক্ত;আর আল্লাহ্ তায়ালাও তার থেকে মুক্ত।তবে, যদি তারা আত্মরক্ষার্থে এমনটি করে থাকে তবে তার কথা ভিন্ন।(সুরা আলে ইমরানঃ ২৮) 
আল্লাহ্‌ তায়ালার আরো বলেন -

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَكُمْ هُزُوًا وَلَعِبًا مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَالْكُفَّارَ أَوْلِيَاءَ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ (57) 

অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ! আহলে কিতাব [ইহুদী ও খৃষ্টানগণ] ও কাফিরদের মধ্য থেকে যারা তোমাদের দ্বীনকে ঠাট্টাবিদ্রূপ ও খেলনার পাত্র হিসেবে গ্রহণ করেছে তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না। আর তোমরা যদি মুমিন হয়ে থাকো তাহলে আল্লাহ্‌ তায়ালাকে ভয় কর।(মায়েদাহঃ৫৭) 
তাফসীরে তাবারীতে বলা হয়েছে- 

ومعنى ذلك: لا تتخذوا، أيها المؤمنون، الكفارَ ظهرًا وأنصارًا توالونهم على دينهم، وتظاهرونهم على المسلمين من دون المؤمنين، وتدلُّونهم على عوراتهم 

 আয়াতের অর্থ হল-হে মুসলমানগণ! তোমরা মুসলমানদেরকে বাদ দিয়ে কাফেরদেরকে তাদের ধর্মের উপর থাকা অবস্থায় সাহায্যকারী হিসেবে গ্রহণ করো না। তাদেরকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সাহায্য করো না এবং তাদের কাছে মুসলমানদের গোপণ তথ্য প্রকাশ করো না (তাফসীরে তাবারীঃ ৬/৩১৩) 
মোটকথা- আল্লাহ্‌ তায়ালা শত্রুদের কাছে এমন গোপণ তথ্য প্রকাশ করাকে হারাম ঘোষণা করেছেন যা মুসলিমদের জন্য ক্ষতিকর। যদি তারা মুসলমানদের ক্ষতি করার জন্য সলাপরামর্শ না করে কিংবা ক্ষতি করার চেষ্টা না করে তাহলে, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করায় কোন ক্ষতি নেই। তবে, ফিলিস্তিন কিংবা অন্যান্য দেশের মত যেখান থেকে শত্রুরা মুসলমানদেরকে নিজ মাতৃভুমি থেকে বের করে দিয়েছে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করা বৈধ হবেনা বরং যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা দখলকৃত ভুমি পুণরুদ্ধার না করব ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সাথে শত্রু হিসেবে আচরণ করা আবশ্যক। (তাফসীরুল ওয়াসীতঃ ১/১৮৭) 
৯) এ বিশ্বাস করা যে, বিশেষ কিছু ব্যক্তি রয়েছে যারা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর শরীয়ত মেনে চলতে বাধ্য নন। 
ইসলামী জীবন ব্যবস্থার দ্বিতীয় ভিত্তি হচ্ছে, রসূলের আনুগত্য৷ এটি কোন স্বতন্ত্র ও স্বয়ং সম্পূর্ণ আনুগত্য নয়৷ বরং আল্লাহর আনুগত্যের এটিই একমাত্র বাস্তব ও কার্যকর পদ্ধতি ৷ রসূলের আনুগত্য এ জন্য করতে হবে যে, আল্লাহর বিধান ও নির্দেশ আমাদের কাছে পৌছার তিনিই একমাত্র বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য মাধ্যম৷ আমরা কেবলমাত্র রসূলের আনুগত্য করার পথেই আল্লাহর আনুগত্য করতে পারি৷ রসূলের সনদ ও প্রমাণপত্র ছাড়া আল্লাহর কোন আনুগত্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না৷ আর রসূলের আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নামান্তর ৷ নিম্নোক্ত হাদীসে এই বক্তব্যটিই সুস্পষ্ট হয়ে 
উঠেছেঃ যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করলো সে আসলে আল্লাহর আনুগত্য করলো এবং যে ব্যক্তি আমার নাফরমানি করলো সে আসলে আল্লাহর নাফরমানি করলো৷ আল্লাহ ও রসূলের নাফরমানীর ক্ষেত্রে কোন আনুগত্য নেই, আনুগত্য করতে হবে শুধুমাত্র 'মারুফ' বা বৈধ ও সৎকাজে ৷ 

আল্লাহ তাআলা বলেন :  قُلْ أَطِيعُواْ اللَّهَ وَالرَّسُولَ فإِن تَوَلَّوْاْفَإِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ الْكَافِرِينَ ‘বলতোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর। তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়তবে নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদেরকে ভালবাসেন না’ (সূরা আলে-ইমরান: ৩২) 


► আল্লাহ তাআলা আরো বলেন منْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللّهَ وَمَن تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظاً ‘যে রাসূলের আনুগত্য করলসে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হলতবে আমি তোমাকে তাদের ওপর তত্ত্বাবধায়ক করে প্রেরণ করিনি’ (সূরা নিসা: ৮০)


► অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে :قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ বল,যদি তোমরা আল¬হকে ভালবাসতাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ  তোমাদেরকে ভালবাসবেন  এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ  অত্যন্ত ক্ষমাশীলপরম দয়ালু’(সূরা আলে ইমরান:৩২) 


► হাদীসে এসেছে : كُلِّ أُمَّتِيْ يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ إِلَّامَنْ أَبَىْ  قَالُوْا وَمَنْ يَأْبَىْ  قَالَ  مِنَ أَطَاعَنِيْ دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِيْ فَقَدْ أَبَىْ   আবু হুরাইরা রাযি. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যেআমার প্রতিটি উম্মত জান্নাতে যাবে। তবে যে অস্বীকার করে সে নয়। সাহাবায়ে কেরাম বললেন,অস্বীকারকারী কেনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনযে আমার অনুকরণ করল সে জান্নাতে যাবে। আর যে আমার নাফরমানী করলসে-ই অস্বীকারকারী’ (বুখারী)। 


 ১০) ইসলামের বিধিবিধান থেকে মুখ ফিরিয়ে চলা, ইসলাম শিক্ষা না করা এবং ইসলাম অনুযায়ী আমল না করা। 

► নিশ্চয় আল্লাহ্‌র নিকট একমাত্র দ্বীন হল ইসলাম। (৩:১৯)

► আল্লাহ তা'আলা বলেন:
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذُكِّرَ بِآَيَاتِ رَبِّهِ ثُمَّ أَعْرَضَ عَنْهَا إِنَّا مِنَ الْمُجْرِمِينَ مُنْتَقِمُونَ
“যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী দ্বারা উপদিষ্ট হয়ে তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় সে অপেক্ষা অধিক যালিম আর কে? আমি অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে থাকি” ( সূরা আস সিজদা: ২২) 

► আল্লাহ আরো বলেন :
“আর বলে দাও, ‘সত্য এসেছে তোমাদের রব্বের নিকট হতে, কাজেই যার ইচ্ছে ঈমান আনুক আর যার ইচ্ছে সত্যকে অস্বীকার করুক।’ আমি (অস্বীকারকারী) যালিমদের জন্য আগুন প্রস্তুত করে রেখেছি যার লেলিহান শিখা তাদেরকে ঘিরে ফেলেছে। তারা পানীয় চাইলে তাদেরকে গলিত শিশার ন্যায় পানি দেয়া হবে যা তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে, কতই না নিকৃষ্ট পানীয়! আর কতই না নিকৃষ্ট আশ্রয়স্থল! (১৮:২৯) 

► আল্লাহ  বলেনঃ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ۚ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ   হে ঈমানদারগণ ! তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি দীন থেকে ফিরে যায়, (তাহলে ফিরে যাক ), আল্লাহ এমনিতর আরো বহু লোক সৃষ্টি করে দেবেন, যাদেরকে আল্লাহ ভালবাসেন এবং তারা আল্লাহকে ভালবাসবে, যারা মুমিনদের ব্যাপারে কোমল ও কাফেরদের ব্যাপারে কঠোর হবে, যারা আল্লাহর পথে প্রচেষ্টা ও সাধনা করে যাবে এবং কোন নিন্দুকের নিন্দার ভয় করবেনা ৷  এটি আল্লাহর অনুগ্রহ, যাকে চান তাকে দান করেন৷ আল্লাহ ব্যাপক উপায় উপকরণের অধিকারী এবং তিনি সবকিছু জানেন৷ [৫ঃ৫৪] 

► প্রিয় নবী  বলেনঃ " শামবাসী অসৎ হয়ে গেলে তোমাদের মধ্যে কোন মঙ্গল নেই .  আর চিরকালের জন্য আমার উম্মতের একটি দল সাহায্য প্রাপ্ত থাকবে,  কিয়ামত কায়েম হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে উপেক্ষাকারীরা তাদের কোন ক্ষতি সাধন করতে পারবেনা" (সহীহ মুসনাদে আহমদ)  

ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা জেনে আমল করতে হবে|
যে জানেনা তারাই অবুঝ অশিক্ষিত | এটা কোনো গালি নয়, এটা বিশেষণ| ক্ষেত্র বিশেষে দোষও বটে! 
জেনেও যদি না
 মানে তার নাম জালেম | আর যদি বুঝার চেষ্টা না করে তাহলে সে জাহেল!
জেনেও মানেনা যারা তারা হলো জালেম, জানার চেষ্টা করে না যারা তারা হলো জাহেল|
 যারা মুমিন নয়, তাদের কানে আছে ছিপি, আর কোরআন তাদের জন্যে অন্ধত্ব। তাদেরকে যেন দূরবর্তী স্থান থেকে আহবান করা হয় ( সূরা হা-মীম সেজদাহ  44) 





খুব কষ্ট করে যারা এত দীর্ঘ লেখাটি পড়েছেন তাদের কে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা| বিবেক বোধ তথা ইসলামিক বোধ টিকিয়ে রাখতে, ধরে রাখতেই এই কথাগুলো শেয়ার করা| আরো সাবলীল ও সুন্দর করে গুছিয়ে লিখতে না পারার ব্যর্থতা স্বীকার করে নিচ্ছি| সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর| শান্তি অবতীর্ণ হোক রাসুল (সা:) এর উপর| আমরা চাই আমরা সফলকামদের অন্তর্ভুক্ত থাকতে| সুরা ফাতেহার শেষ দুটি লাইন, আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
আমিন ইয়া রাব্বুল আরশিল আজিম|