কোথায় সেই আল্লাহর সৈনিক , কোথায় সেই মুজাহিদ ।

সমগ্র আরব ভূখণ্ড তথা দুনিয়াব্যাপী তখন চলছে বেপরোয়া হিংস্র থাবা বিস্তৃত হয়েছিল পরিবার থেকে রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। দ্বন্দ্ব-সংঘাত, খুনাখুনি ইত্যাদি ছিল তৎকালীন বিশ্বের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। ফুলের মতো নিষ্পাপ কন্যাশিশু তখন নিজ পিতা কর্তৃক জীবন্ত প্রোথিত হওয়ার ভয়ে অস্থির, সম্পত্তির লোভে সন্তান মাতাকে বিয়ে করতে মরিয়া, সুদ-ঘুষ, অশ্লীল গান-বাদ্য-নৃত্য, মদ্যপান, জেনা-ব্যভিচার, জুলুম-অত্যাচারে ঢাকা গোটা বিশ্ব। ইতিহাস যাকে আখ্যায়িত করেছে আইয়ামে জাহেলিয়া তথা অন্ধকার যুগ হিসেবে।

সেই মানবসমাজের সেই ঘোর অন্ধকারে, হেদায়েতের আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে, এই পাপময় মাটিকে পূতপবিত্র করতে শুভাগমন ঘটে এক মহান মানবের। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যাকে অভিহিত করেছেন সমগ্র জগতের রহমত হিসেবে। আল্লাহর কলামে এরশাদ হচ্ছে, ‘হে নবী! নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সৃষ্টি জগতের রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।’ যে মহান নবীর আগমনে ধন্য হল ধূলির ধরা, যার মঙ্গলময় স্পর্শে অশান্তিময় পৃথিবীতে বয়ে গেল শান্তির ফল্‌গ-ধারা, সেই শান্তির মহান দূতকে বিতর্কিত করতে, মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে খ্রিস্টান-ইহুদিচক্র এবং তাদের দোসররা। তাদের সেই দোসরদের তালিকায় আছে আমাদের দেশের কিছু মুসলিম নামধারী নরাধম। আল্লাহর লানত ও মানুষের ঘৃণা নিয়ে যাদের অনেকেই এখন পরবাসী জীবন কাটাচ্ছে। ও কিছু আছে বর্তমানে আমাদের চারি পাশে . যাকে আল্লাহ তায়ালা তার কালামে-পাকে পরিচয় করিয়েছেন মোনাফেক পরিচয়ে .

মুহাম্মদ (সা·)- সমাজ সংস্কারক হিসেবে, রাজনীতিবিদ হিসেবে, বিচারক হিসেবে, স্বামী হিসেবে, পিতা হিসেবে, নেতা হিসেবে, রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে, অর্থনীতিবিদ হিসেবে, শাসক হিসেবে, ব্যবসায়ী হিসেবে অর্থাৎ মানবজীবনের প্রতিটি বিষয়ে তিনি ছিলেন অনুপম, অতুলনীয় এক মহান আদর্শের ধারক ও বাহক।
তৎকালীন আরব সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দেয়া লোভনীয় প্রস্তাবকে দু’পায়ে মাড়িয়ে গেছেন তিনি। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় তাঁর সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি কোন কিছুই। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তিনি ঘোষণা করলেন, আমার এক হাতে সূর্য এবং এক হাতে চন্দ্র এনে দিলেও সত্য প্রচারে আমি পিছপা হব না। আর সেই নবীর! উম্মত হিসেবে আমরা কি তার আদর্শ একটুও ধারণ করতে পারবনা . তাহলে কি আমরা আবার সেই জাহেলিয়া জগতে পাঁ রাখছি??

মহান আল্লাহ আমাদের তাঁর প্রিয় বন্ধু, প্রিয় হাবিব মুহাম্মদ (সা·)-এর আদর্শ, আমাদের পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র তথা সব ক্ষেত্রেই বাস্তবায়ন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।