মামুনের দরবারের একটি ঘটনা .....

واناله لحفظون -অর্থাৎ আমিই এর সংরক্ষক ..আল্লাহ তালা স্বয়ং এর হেফাজত কারী ./


ইমাম কুরতুবী এ স্থলে মুত্তাসিল সনদ দ্বারা মামুন রশিদের দরবারে একটি ঘটনা বর্ণনা করছেন .মামুনের দরবারে মাঝে মাঝে শিক্ষা সম্পর্কিত বিষযযদি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হত . এতে জ্ঞান -বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার পন্ডিত ব্যক্তিগণের অংশ গ্রহন অনুমতি ছিল .এমনি এক আলোচনা সভায় জনৈক ইহুদী পন্ডিত আগমন করল .আকার আকৃতি,পোশাক ইত্যাদি দিকদিয়েও তাকে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি মনে হচ্ছিল . তদুপরি তার আলোচনা ছিলো অত্যন্ত প্রাঞ্জল,অলংকারপূর্ণ এবং বিজ্ঞজনসুলভ .সভা শেষে মামুন তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন:তুমি কি ইহুদী? সে স্বীকার করল. মামুন পরীক্ষা করার জন্য বললেন:তুমি যদি মুসুলমান হয়ে যাও তবে তোমার সাথে চমত্কার ব্যবহার করা হবে .


সে উত্তরে বলল:পৈতিক ধর্ম বিসর্জন দিতে পারি না .কথাবার্তা এইখানেই শেষ হয়ে গেল লোকটি চলে গেল. কিন্তু এক বছর পর সে মুসলমান হয়ে আবার দরবারে আগমন করল এবং আলোচনা সভায় ইসলাম ফেকা সম্পর্কে সারগর্ভ বক্ততা ও যুক্তিপূর্ন তথ্যাদি উপস্হিত করল.সভাশেষে মামুন তাকে ডেকে বললেন: আপনি কি ঐ ব্যক্তি,যে বিগত বছর এসেছিল? সে বলল: হাঁ,আমি ঐ ব্যক্তিই বটে. মামুন জিজ্ঞেস করলেন:তখন তো আপনি ইসলাম গ্রহন করতে অস্বীকৃত ছিলেন এরপর এখন মুসলমান হওয়ার কি কারণ ঘটল?
সে বলল:এখান থেকে ফিরে যাওয়ার পর আমি বর্তমান কালের বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে গবেষনা করার ইচ্ছে করি. আমি একজন হস্তলেখাবিশারদ. স্বহস্তে গ্রন্থাদি লিখে উচুঁ দামে বিক্রয় করি. আমি পরীক্ষার উদ্দেশে তওরাতের তিনটি কপি লিপিবদ্ধ করলাম এগুলিতে অনেক জায়গায় নিজের পক্ষ থেকে বেশকম করে লিখলাম. কপিগুলো নিয়ে আমি ইহুদিদের উপাসনালয়ে উপস্থিত হলাম . ইহুদীরা অত্যন্ত আগ্রহ সহ্কারে আমার কপি গুলো কিনে নিল. অত:পর এমনিভাবে ইঞ্জিলের তিন কপি করলাম কম-বেশ করে লিখে খ্রীষ্টানদের উপাসনালয়ে নিয়ে গেলাম. সেখানেও খ্রীষ্টানরা খুব খাতির যত্ব করে কপিগুলো আমার কাছ থেকে কিনে নিল. এরপর কোরআনের বেলাও আমি কম-বেশি করে লিখলাম. তিনটি কপি সুন্দরভাবে লিপিবদ্ধ করলাম এবং এগুলো নিয়ে যখন বিক্রিয়াথ বের হলাম,তখন যে-ই দেখল,সে-ই প্রথমে আমার লেখা কপিটি নির্ভুল কি না যাচাই করে দেখল .অত:পর বেশ কম দেখে কপিগুলো ফেরত দিয়ে দিলো.
এ ঘটনা দেখে আমি এ শিক্ষাইগ্রহন করলাম যে,গ্রন্থটি হুবহু সংরক্ষিত আছে এবং আল্লাহ তাআলা নিজেই আর সংরক্ষণ করছেন.এরপর আমি মুসলমান হয়ে গেলাম.
এই ঘটনা বর্ণনাকারী কাজী ইয়াহইয়া ইবনে আকতাম বলেন:ঘটনাক্রমে সে বছরই আমরা হজব্রত পালন করার সৌভাগ্য হয়.সেখানে প্রখ্যাত আলেম সুফিয়ান ইবনে ওয়াইনার সাথে সাক্ষাত হলে ঘটনাটি তার কাছে ব্যক্ত করলাম.তিনি বললেন:নিঃসন্দেহে অরূপ হওয়াই বিধেয়. কারণ,কোরআন পাকে এ সত্যের সমর্থন বিদ্যমান রয়েছে. ইয়াহইয়া ইবনে আকতাম জিজ্ঞেস করলেনঃ কোরআনের কোন আয়াতে আছে এইলেখা ? সুফিয়ান বলেন কোরআন পাক যেখানে তওরাত ও ইঞ্জিলের আলোচনা করেছে,সেখানে বলেছে بمااستحفظوامن كتب الله ইহুদী ও খ্রীষ্টানদের আল্লাহর গ্রন্থ তওরাত ও ইঞ্জিল হেফাজতের দযিত্ব দেয়াহয়েছে. এ কারনেই যখন ইহুদী ও খ্রীষ্টানরা হেফাজতের কর্তব পালন করেনি,এ গ্রন্থদ্বয় বিকৃত ও পরিবর্তিত হয়ে বিনষ্ট হয়ে গেছে . পক্ষান্তরে কোরআন পাক সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন واناله لحفظون -অর্থাৎ আমিই এর সংরক্ষক ..আল্লাহ তালা স্বয়ং এর হেফাজত কারী ./